কেন নেটওয়ার্ক অটোমেশন?
রোড টু হাইটেক ইন্ডাস্ট্রি সিরিজ: ড্রাফট¶
বইটা এখনো ড্রাফট
কাজের সময়ের ফাঁকে ফাঁকেই বই লিখি। বিশেষ করে নিজের কাজের অভিজ্ঞতা থেকে। বইয়ের ব্যাপারে ইনপুট দিতে চাইলে আমাকে হোয়াটসঅ্যাপ করতে পারেন +৮৮০১৭১৩০৯৫৭৬৭ নম্বরে। আমার অবসর সময়ে মাথায় যা আসবে, সেটাকেই স্ক্র্যাপবুক হিসেবে ফেলবো এখানে। আস্তে আস্তে আউটলাইন দাড়িয়ে যাবে এখানে।
টাইমলাইন: বইমেলা ২০২৪
– রকিবুল হাসান, ড্রাফট ভার্সন: ০.৭ (টাইমলাইন ১৪ মাস)
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে বাংলায় সব বই¶
এবারের ঈদের ছুটিটা কিভাবে যেন একটু বেশিই লম্বা হয়ে গেল। আমার তো ধারণাই ছিল না যে এত দিন ছুটি পাব। তাই ভাবলাম, কেন না? এই সুযোগে একটা বড়সড় প্রজেক্ট হাতে নেওয়া যায় কি? আসলে কি জানেন, প্রতি ঈদেই আমার এই অভ্যাস - কিছু না কিছু একটা করতেই হবে। এমনিতে তো সারা বছর ব্যস্ততার মধ্যে দিন কাটে, তাই ছুটি পেলেই মনটা চায় কিছু একটা ক্রিয়েটিভ কাজে হাত দিতে। এবার তাই মনে করলাম, সেই পুরনো প্রজেক্টটাকে আবার নতুন করে শুরু করা যায় কিভাবে? দেড় বছর আগে 'নেটওয়ার্ক অটোমেশন' নিয়ে একটা বই লিখতে শুরু করেছিলাম। কিন্তু বুঝতেই পারছেন, সময়ের অভাবে তেমন এগোতে পারিনি। এখন ভাবছি, এই ছুটিতে সেটাকেই আবার হাতে নেব।
তবে চ্যালেঞ্জ কম নেই। বইটাতে অনেকগুলো সফটওয়্যার প্রসেস আর ওয়ার্কফ্লো নিয়ে লিখতে হবে। এগুলো নিয়ে ভালো করে চিন্তাভাবনা করতে হবে, তাই ঠান্ডা মাথায় বসে কাজ করার পরিকল্পনা করেছি। স্বাতীর সাথেও কথা হয়েছে। ওকে বলেছি, এটা শেষ করতে পারলে ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে ছুটিতে যাব। তাই এখন আর পেছনে তাকানো নয়, শুধু এগিয়ে যেতে হবে। আর হ্যাঁ, বইটার নাম ঠিক করেছি - "আইএসপি/নেটওয়ার্ক অটোমেশন: ইনফ্রাস্ট্রাকচারকে কোডিং"। আশা করছি, এই বইটা নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য একটা ভালো রিসোর্স হয়ে উঠবে।
Tesla: 'Operation Vacation'
The idea is to automate Tesla's machine learning pipeline to the point where all the engineers can go on vacation and Tesla's partially autonomous driving features will continue to improve automatically. The fleet will continue to upload data automatically, a workforce of hand-labelers will continue to label data where necessary, neural networks will be automatically trained on the new data, and then the improved networks will be deployed to the fleet. The cycle repeats.
The idea of the engineers going on vacation is tongue-in-cheek because there is always work to be done; innovation never stops.
মজার একটা গল্প মনে পড়ল! প্রায় পাঁচ বছর আগের কথা। টেসলার এক ভদ্রলোক - নাম তার আন্দ্রেজ কাপার্থী - একটা দারুণ আইডিয়া দিয়েছিলেন। বললেন, "চলুন, এমন একটা সিস্টেম বানাই, যেখানে মেশিন খাটবে আর আমরা ফুর্তি করব!" আমি তো শুনে একদম মুগ্ধ! ভাবটা কি জানেন? ইঞ্জিনিয়াররা একটা জাদুর কাঠি বানাবেন, যেটা দিয়ে সব কাজ অটো হয়ে যাবে। আর তারা বেমালুম ছুটিতে চম্পট দেবেন! দারুণ না?
এখন শুনুন মজার ব্যাপার - ওরা সত্যি সত্যি ছুটিতে যেতে পেরেছিলেন কি না, সেটা বড় কথা না। আসল মজা হল, যে সব কাজ আগে হাত দিয়ে করতে হত, সেগুলো এখন মেশিন করছে! আর যারা আগে লেবেল মানে লেবেলিং করতেন, তাদের এখন হাঁফ ছাড়ার সময় হয়েছে। কি, বুঝতে পারছেন? যন্ত্র খাটবে আর আমরা মজা করব! আর যদি মজা না-ই করতে পারি, অন্তত মনে একটা শান্তির ভাব আসবে যে, "আরে বাবা, আমার বদলে ওই যন্ত্রটা খাটছে!"
আমিও ঠিক এই কাজটাই করতে চাই। আমাদের ইঞ্জিনিয়ার ভাইদের একটু হাঁফ ছাড়ার সময় দিতে চাই। ওরা যেন একটু ঘুরতে ফিরতে পারেন, জীবনটা উপভোগ করতে পারেন। এই যে বলে না - লাইফ ইজ শর্ট, এনজয় ইট! তাই না? আসলে কি জানেন, এই ইঞ্জিনিয়ারদের লাইফে তো ওয়ার্ক-লাইফ ব্যালেন্স বলে কিছু নেই। সব সময় কাজ আর কাজ। তাই ভাবছি, এই অটোমেশনের ম্যাজিক উনাদের জীবনে একটু রঙ ছড়াবে। হয়তো এর পর থেকে উনারা লোকাল প্রজেক্টের পাশাপাশি গ্লোবাল প্রজেক্টে কাজ করার সুযোগও পাবেন। তাই বলছি, এই অটোমেশন প্রজেক্টটা পাল্টে দেবে আমাদের জীবন। দেখুন না কি হয়!
আমাদের এই ইন্টারনেট ব্যবসায় কি যে হচ্ছে, বলে শেষ করতে পারব না! আগে কি হত জানেন? সেলস ভাইরা ঘুরে ঘুরে কানেকশন বিক্রি করতেন। এখন আমরা একটা 'বাঘের বাচ্চা' স্টাইলের ফন্দি বের করেছি! কাস্টমারটা নিজেই নিজেই সবকিছু করে ফেলবেন, উনারাই তাদের কানেকশন প্রোভিশন করবেন, সেট করবেন ব্যান্ডউইড্থ লিমিট, কতদিনের জন্য কিনছেন, আর ইঞ্জিনিয়াররা নাকে তেল দিয়ে ঘুমাবেন, হা হা হা! সেটাই প্ল্যান, এর মধ্যে ৪০% হলেও ক্ষতি কি?
শুনুন তো কেরামতি - একটা ওয়েবসাইট বানিয়েছি, যেখানে কাস্টমার ঢুকলেই ধরা! নিজেই বেছে নেবেন কোন কানেকশন লাগবে, কোথায় লাগবে, কবে লাগবে, কত টাকা খরচা পড়বে - সব! আর এই কাস্টমার জানবেও না যে, সে নিজেই নিজের জন্য একটা জটিল ডেলিভারি প্ল্যান বানিয়ে ফেলছে! এখন মজার ব্যাপার কি জানেন? যেই না কাস্টমার 'সাবমিট' বাটনে ক্লিক করলো, অমনি পেছনে একটা তুফান ওয়ার্কফ্লো শুরু! আমাদের কম্পিউটার অটোমেশন এজেন্ট ভাইরা (সফটওয়্যার) এমন নাচানাচি শুরু করবে যে, দেখলে মাথা ঘুরে যাবে!
প্রথমেই ওয়েবসাইট ছুটবে কাস্টমারের লোকেশন খুঁজতে। উনাদের মোবাইলের জিপিএস লোকেশন থেকে আমাদের স্প্লিটার (ফাইবারের কাছের পয়েন্ট) তারপর শুরু হবে এনআইডি চেক (কাস্টমার আইডেন্টিফিকেশন [স্যাফ ফর্ম]), ওসিআর, ফাইবার নেটওয়ার্কের হিসাব-নিকাশ (ওভারহেড/আন্ডারগ্রাউন্ড)- যেন কোনো গোয়েন্দা সিনেমার দৃশ্য! এরপর? ব্যাংকের সাথে সফটওয়্যার কথা বলে (এপিআই দিয়ে) টাকা কেটে নেওয়া। তারপর আমাদের বিলিং সিস্টেম যেন পাগলের মতো ছুটোছুটি শুরু করবে - নেটওয়ার্ক অটোমেশন প্ল্যাটফর্মে বাড়ি দেবে, সেখান থেকে আবার মাইক্রোটিক রাউটারে, কোন কিউ, ফায়ারওয়াল রুল সেট, ওএলটিতে দরকারি ভিল্যান প্রভিশন, আপস্ট্রীম প্রোভাইডারের কাছে দরকারি ব্যান্ডউইড্থ আপগ্রেড - যেন একটা ডমিনোর খেলা!
শেষমেশ, কাস্টমারের বাসায় ডিভাইস পাঠানোর হুকুম যাবে টিকেটিং সিস্টেমে। পুশ হবে স্পেসিফিক বাকেটে। কে নিয়ে যাবে? সাপোর্ট টিম, নাকি শিপিং করা হবে - সেটা আবার প্যাকেজের উপর নির্ভর করবে 'পাঠাও'এর ডেলিভারি সিস্টেমে এপিআই দিয়ে। যেন লটারির টিকিট! আর এই সব হৈ-হুল্লোড়ের মধ্যে, কাস্টমারের ফোনে ঢুকে পড়বে একটা মেসেজ - "আপনার ইন্টারনেট আসছে কিন্তু, তৈরি থাকুন!" আরে বাপরে, এত কাণ্ড, অথচ আমাদের সেলস আর টেকনোলজি ভাইদের একটা আঙ্গুলও নাড়তে হল না! এই যে বলে না - "আপনি ঘুমান, কোম্পানির অটোপাইলট টাকা কামাক"। ঠিক তেমনি ব্যাপার!
জানেন কি? এই যে এতক্ষণ ধরে গল্প করলাম, এই সব তুঘলকি কাণ্ড হবে শুধু একটা বোতাম টিপে! হ্যাঁ হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন। কাস্টমার ভাই যেই না সেই জাদুর 'সাবমিট' বাটনে আঙ্গুল ছুঁইয়েছে, অমনি শুরু মহাভারত! এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই সব গালগল্প কতটা সত্যি হবে? হা হা, সেটা তো ভবিষ্যৎ বলে দেবে! আমরা কি আর ভবিষ্যদ্বক্তা নাকি? তবে এই মহাযজ্ঞ শুরু করতে লাগবে একটা জাদুর লাঠি। আর সেই লাঠি হচ্ছে 'নেটওয়ার্ক অটোমেশন'-এর একটা বেসিক গাইডবুক!
আপাতত আমরা হাঁটব খুব আস্তে আস্তে, যেন নতুন হাঁটা শিখছে এমন বাচ্চা। হাটিহাটি পা পা করে এগোব, তারপর দৌড়ানোর পালা! আর এই মহান কর্মযজ্ঞের শুরুটা কোথায় জানেন? এই যে ঈদের ছুটি পেয়েছি, এখানেই! খাওয়া-দাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে এই বইটা একটা লেভেলে নিয়ে আসবো, এই আর কি!
কি বলেন? একটু বেশি বাড়িয়ে বললাম নাকি? নাকি ঠিক আছে?
কেন দরকার নেটওয়ার্ক অটোমেশন?¶
আমরা যারা নেটওয়ার্ক/আইএসপি ম্যানেজ করি, আমাদের এক নম্বর মাথাব্যথা কি জানেন? সার্ভিস আপটাইম! কিসের আপটাইম? ইন্টারনেট। হ্যাঁ হ্যাঁ, ঠিক শুনেছেন। এই ইন্টারনেট যেন একটা জোঁকের মতো, মানুষের গায়ে এমনভাবে সেঁটে আছে যে ছাড়ানো যায় না! মনে আছে সেই পুরনো দিনের কথা? দশ-পনেরো বছর আগেও ইন্টারনেট না থাকলে কি করতাম? বেরিয়ে পড়তাম বাইরে, বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারতাম। টং দোকানে চা খেতাম। কিন্তু এখন? ওরে বাবা! ইন্টারনেট ছাড়া দুই মিনিট থাকতে পারি না। যেন অক্সিজেন বন্ধ করে দিয়েছে কেউ! আমার বাচ্চাদের দিকে তাকাতে পারি না, যখন ইন্টারনেট থাকে না।
আর বিজনেসের কথা আর নাই বা বলি! ২৪ ঘণ্টা, সাত দিন, প্রতি মিনিট - সব সময় লাগবে ইন্টারনেট। নাহলে যে গোল্লায় যাবে বিজনেস! ধরুন, দারাজ, ফুডপান্ডা, বিকাশের কথা। উনাদের যদি দুই সেকেন্ডের জন্য ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে যে কত টাকার ক্ষতি হবে, হিসাব করতে গেলে ক্যালকুলেটর গরম হয়ে যাবে! এখন প্রশ্ন হল, এত বড় ঝামেলা কি আমরা হাত দিয়ে সামলাতে পারব? না। পারলে তো বেঁচে যেতাম! আসলে কি জানেন, এই ইন্টারনেট সেবা দেওয়ার ব্যাপারটা এখন আর ছোটখাটো জিনিস নেই। এখন যারা দুই লাখ মানুষকে ইন্টারনেট দিচ্ছে তারা কি করে দশ লাখ লোককে দেবে? মানুষ দিয়ে কি হবে আর? লাগবে এন্ড টু এন্ড প্রসেস ফ্লো! অটোমেশন! সবাই এখন অটোমেশনের দিকে ছুটছে। কারণ কি জানেন? শুধু খরচ কমে না, কাজও হয় ঝটপট। যেটা মানুষ করতে ঘণ্টা লাগায়, মেশিন করে ফেলে মিনিটে! 'মানুষের মতো' ভুল নেই বললেই চলে। তাই বলছি, এখন যুগটাই অন্যরকম। চাই অটোমেশন। ২৪ ঘণ্টা, সাত দিন, প্রতি মিনিট নেটওয়ার্ক চালু রাখতে হলে লাগবে নেটওয়ার্ক অটোমেশন।