Skip to content

টেকনিক্যাল ডিপ ডাইভ

🛠 ওয়াইফাই ইঞ্জিনিয়ারিং: অ্যাডভান্সড টেকনিক্যাল গাইডলাইন

টিমের জন্য গভীর টেকনিক্যাল প্যারামিটারগুলো নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।


১. EIRP এবং ট্রান্সমিট পাওয়ারের গভীর বিশ্লেষণ

ইঞ্জিনিয়ারদের বুঝতে হবে যে শুধু রাউটারের পাওয়ার বাড়ালেই হবে না। বাংলাদেশের বিটিআরসি (BTRC) নিয়ম অনুযায়ী, ২.৪ গিগাহার্টজে EIRP সীমা সাধারণত \(20\text{ dBm}\) এবং ৫ গিগাহার্টজে \(30\text{ dBm}\) পর্যন্ত হতে পারে (ইনডোর)।

  • গাণিতিক উদাহরণ: যদি একটা রাউটারের আউটপুট পাওয়ার হয় \(17\text{ dBm}\) এবং অ্যান্টেনা হয় \(5\text{ dBi}\), তবে: $\(EIRP = 17\text{ dBm} + 5\text{ dBi} = 22\text{ dBm}\)$
  • সমস্যা: যদি আমরা হাই-গেইন অ্যান্টেনা (যেমন \(9\text{ dBi}\)) লাগাই, তবে EIRP বেড়ে যাবে। এতে রাউটারের সিগন্যাল দূরে যাবে ঠিকই, কিন্তু গ্রাহকের মোবাইল (যার পাওয়ার মাত্র \(12\text{-}15\text{ dBm}\)) রাউটারকে উত্তর পাঠাতে পারবে না। ফলে ইন্টারনেটে 'Request Timeout' আসবে।

২. রিসিভার সেন্সিটিভিটি (Receiver Sensitivity)

এটি হলো একটা ডিভাইসের সিগন্যাল বোঝার সর্বনিম্ন ক্ষমতা।

  • সাধারণত একটা স্মার্টফোনের সেন্সিটিভিটি থাকে \(-80\text{ dBm}\) থেকে \(-90\text{ dBm}\) পর্যন্ত।
  • ইঞ্জিনিয়াররা যখন সিগন্যাল চেক করবেন, তখন দেখবেন যেন সিগন্যাল লেভেল \(-67\text{ dBm}\) এর উপরে থাকে (যেমন \(-50\) বা \(-60\))। যদি এটি \(-70\text{ dBm}\) এর নিচে নেমে যায়, তবে ভিডিও কল বা গেমিংয়ে সমস্যা হবে।

৩. SNR (Signal-to-Noise Ratio)

শুধু সিগন্যাল থাকলেই হবে না, সিগন্যালটা কতটা পরিষ্কার সেটা দেখতে হবে।

  • সূত্র: $\(SNR = \text{Signal Level} - \text{Noise Floor}\)$
  • যদি সিগন্যাল হয় \(-60\text{ dBm}\) আর ওই এলাকায় নয়েজ থাকে \(-90\text{ dBm}\), তবে \(SNR = 30\text{ dB}\)
  • থাম্ব রুল: ভালো পারফরম্যান্সের জন্য SNR অন্তত \(25\text{ dB}\) হওয়া উচিত। নয়েজ বেশি হলে ডাটা প্যাকেট লস হয় এবং স্পিড কমে যায়।

৪. বিল্ডিং পেনিট্রেশন লস (Wall Attenuation)

টেকনিশিয়ানদের মুখস্থ রাখতে হবে কোন বাধা সিগন্যালকে কতটুকু কমিয়ে দেয়:

  • সাধারণ কাঁচ: \(3\text{ dB}\) (খুবই কম লস)।
  • কাঠের দরজা: \(3\text{ dB}\) থেকে \(5\text{ dB}\)
  • ইটের দেয়াল: \(10\text{ dB}\) থেকে \(15\text{ dB}\)
  • আরসিসি বা কংক্রিট দেয়াল: \(20\text{ dB}\) বা তার বেশি।

মনে রাখবেন: প্রতি \(3\text{ dB}\) লস মানে সিগন্যালের শক্তি অর্ধেক হয়ে যাওয়া। অর্থাৎ একটা ইটের দেয়াল পার হলে সিগন্যাল তার শক্তির প্রায় ৯০% হারিয়ে ফেলে!


৫. রেডিও লাইন অফ সাইট (RLoS) ও ফ্রেনেল জোন (Fresnel Zone)

ইনডোরের ক্ষেত্রেও ফ্রেনেল জোন কাজ করে। রাউটার আর ডিভাইসের মাঝখানের পথ শুধু পরিষ্কার থাকলেই হবে না, তার আশেপাশের এলাকাও কিছুটা ফাঁকা থাকতে হবে। সিগন্যাল যেন কোনো বাধা থেকে প্রতিফলিত (Reflection) হয়ে মাল্টি-পাথ ইন্টারফারেন্স তৈরি না করে।


ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য টেকনিক্যাল গাইডলাইন

  1. ব্যান্ডউইথ অ্যালোকেশন: ২.৪ গিগাহার্টজে সবসময় 20 MHz চ্যানেল উইডথ ব্যবহার করতে বলবেন। 40 MHz করলে ইন্টারফারেন্স বেড়ে যায়। ৫ গিগাহার্টজে চাইলে 40 MHz বা 80 MHz করা যায় যদি নয়েজ কম থাকে।

  2. RSSI চেক: কাজ শেষে টেকনিশিয়ান তার ফোনের অ্যাপ দিয়ে দেখাবে যে ঘরের সব কোণায় RSSI ভ্যালু \(-67\text{ dBm}\) এর চেয়ে ভালো (যেমন \(-55\) বা \(-60\)) আছে কিনা।

  3. বিমফর্মিং (Beamforming): যদি রাউটারে এই অপশন থাকে, তবে এটি অন করে দিতে হবে। এতে রাউটার সিগন্যাল চারদিকে না ছড়িয়ে সরাসরি ডিভাইসের দিকে ফোকাস করে।