কনটেন্টে যান

এগিয়ে থাকতে ডেটাকে ঠিকমতো 'কমুনিকেট' করতে পারা

ডাটাকে ঠিকমতো "কমিউনিকেট" করার স্কিল + স্টোরিটেলিং

একটা পরিসংখ্যানে দেখা গেছে প্রতিটি ‘জব’ অর্থাৎ কাজে ডাটার ব্যবহার বেড়েছে বলে সেই ডাটাকে কিভাবে কমিউনিকেট করা যায় সেটা নিয়ে অনেক রিসার্চ হচ্ছে। যে জিনিসটা নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলাপ হচ্ছে, কোথাও এগিয়ে থাকতে হলে ডাটাকে আমাদের স্টেকহোল্ডারদের (আমাদের ম্যানেজমেন্ট অথবা ক্লায়েন্ট) মধ্যে ঠিকমতো কমিউনিকেট করতে পারতে হবে। এদিকে আমরা যখন ডাটাকে ঠিকমতো ‘কমিউনিকেট’ করব - তখন সেটার জন্য প্রয়োজনীয় ‘রিকমেন্ডেশন’ যেমন আগের প্রপোজাল, অ্যাকশন প্ল্যান অথবা রিপোর্টগুলোকে প্রযোজ্য মাপে কাটছাঁট করতে হবে যাতে যেখানে যেটা প্রযোজ্য সেখানে সে ধরনের ডাটা থেকে ইন্সাইট দিতে পারা যায়। যিনি সবচেয়ে ভালো কমিউনিকেটর, তিনি ডাটাকে ঠিকমতো স্ট্রাকচারে ফেলে একটা বিশ্বাসযোগ্য (যেহেতু পেছনে ডাটা আছে) এবং মনে রাখার মত স্টোরিটেলিং ন্যারেটিভে প্লট করেন বলেই উনি বাকিদের থেকে এগিয়ে থাকেন।

আমাদের এই স্টোরির সুবিধা হচ্ছে, তাদের স্টেকহোল্ডারকে (আমাদের ম্যানেজমেন্ট অথবা ক্লায়েন্ট হতে পারেন) ঠিক কি মেসেজ কমিউনিকেট করা হচ্ছে যার পুরো ব্যাপারটাই একটা ভালো ‘রেশ’ ফেলে তাদের মনে। ফলে ব্যাপারটা মনে থাকে তাদের। এ কারণে ঠিক ধরনের ভিজুয়াল এবং মুখের গল্পে যখন একটা রিকমেন্ডেশন কমিউনিকেট করা হয় তখন সেখানে অসাধারণ কিছু স্টোরি টেলিং এবং প্লটের ব্যাপার চলে আসে। এছাড়া, শুধু মুখের কথায় “বুঝ” দেওয়ার ধারণাগুলো চলে যাচ্ছে আস্তে আস্তে। যেকোনো ধারণাকে বিশ্বাসযোগ্য করতে হলে গল্পের সাথে যোগ করতে হবে ডাটা। আমাকে হাতে শুধু গল্প এবং ডাটা থাকলেই হবে না, সেটাকে ইফেক্টিভলি কমিউনিকেট করতে পারতে হবে।

সেটা কিভাবে সম্ভব?

আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বলে, ধরুন - আমি যদি কোন ধারনাকে আমার অরগানাইজেশনকে ঠিকমতো পিচ করতে পারি, এবং অরগানাইজেশন যদি সেই ধারণাকে নিজের মনে করে, অর্থাৎ ওনারশিপ নেয় - তাহলে আপনার কমিউনিকেশন সাকসেসফুল। আপনার কমিউনিকেশন তখনই সবার গ্রহণযোগ্যতা পাবে যখন সেটার পেছনে ডাটা এবং অসাধারণ স্টোরিটেলিং থাকবে। শুধুমাত্র পরিসংখ্যান কেউ মনে রাখে না বলে ডাটাকে পরিণত করতে হয় ন্যারেটিভে।

যে কোন জিনিসের ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস আপনার মনে না থাকলেও সেই ছোটবেলায় পড়া খরগোশ এবং কচ্ছপের গল্প ঠিকই মনে আছে। কেন? স্টোরি টেলিং এবং একটা দর্শন। যখন ডাটা অর্থাৎ পরিসংখ্যানকে একটা গল্পের ন্যারেটিভে ট্রানসফর্ম করা হয় তখন সেই কম্মুনিকেশন অধিকমাত্রায় গ্রহণযোগ্যতা পায়। সে কারণে আমার বইগুলোতে নিজের এবং আশেপাশের গল্পের ছড়াছড়ি।

পুরনো ডাটা থেকে ধারণা নিয়ে ভবিষ্যৎ দেখার উপলব্ধি তৈরি

ডাটার একটা বড় কাজ হচ্ছে পুরনো ঘটনাগুলোকে ঠিকমতো ক্যাটালগিং করতে পারা। একটা ভালো সিদ্ধান্ত নেবার জন্য এধরনের পুরনো তথ্য বিশেষ করে হিস্টোরিক্যাল ডাটা খুবই প্রয়োজনীয়। আর যারা ডাটা নিয়ে কাজ করেন তারা সত্য ঘটনা উদঘাটনে বিশ্বাসী। যখন আমরা আস্তে আস্তে একটা লিডারশীপ পজিশনে যাব, তখন এই সত্য ঘটনাকে অবলম্বন করে আমাদেরকে ভবিষ্যৎ দেখতে পারতে হবে। সেকারণে পুরনো ডাটা থেকে ধারণা নিয়ে ভবিষ্যৎ দেখার উপলব্ধি তৈরি করে সেটাকে সবার মধ্যে কম্মুনিকেট অর্থাৎ ছড়িয়ে দিতে পারতে হবে। তাহলেই একজন মানুষ লিডারশীপ পজিশনে এগিয়ে যেতে পারবেন। আগের ঘটনা থেকে ঠিকমত ইন্সাইট নিয়ে সামনের ডাইরেকশন ঠিকমতো বুঝে সে ধরনের কর্মপন্থা তৈরি করার জন্য একজনকে কমিউনিকেশন স্কিলে এক্সপার্ট হতে হবে।

ক্যারিয়ারের বিভিন্ন ধাপে কমিউনিকেশনের ব্যবহার

চিত্র: ডেটাকে কমিউনিকেট করার কয়েকটা ধাপ

আমি যেটা বুঝি, এই একুশ শতকে - ডাটা দিয়ে কমিউনিকেশন স্কিল ডেভেলপ করার জন্য, ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই মনোযোগ দেওয়া উচিত। শুরুতে শিক্ষানবিস হিসেবে আমরা যখন ডাটা নিয়ে এক্সপ্লোরেশন এবং এনালাইজ করতে শুরু করি (যাতে অন্যান্যরা বুঝতে পারেন), তখন আমাদের এই এক্সপ্লোরেশন যাত্রা শুরু হয়। এই ধরনের ডাটা থেকে টিমের অন্যদের আইডিয়া এবং নিজের ‘পয়েন্ট অফ ভিউ’ থেকে যখন একটা সম্মিলিত ‘রিকমেন্ডেশন’ তৈরি হয় - তখন সেটাকে ‘এক্সপ্লেইন’ করার দায়িত্ব মিড লেভেল ম্যানেজমেন্টের ওপরে পড়ে। প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে উপরের ম্যানেজমেন্ট লিডারদের কাজ হচ্ছে এই সব ধরনের আইডিয়া এবং ‘পয়েন্ট অফ ভিউ’গুলোকে নিজের মত করে এনালাইজ করে সবার জন্য আলাদা আলাদা অ্যাকশন প্ল্যান ডেভলপ করে সবার মধ্যে ‘কমিউনিকেট’ অর্থাৎ ছড়িয়ে দেওয়া। এ ধরনের ‘ইন্সপায়ার’ করার কাজের জন্য আগের ডাটা থেকে প্রচুর ইনসাইট নেয়া যেতে পারে।

কমিউনিকেশনে কনটেক্সটের প্রযোজ্যতা

আমি যেটা দেখেছি, আপনার একটা রিকমেন্ডেশন যদি ম্যানেজমেন্টকে ঠিকমত বুঝতে হয় তাহলে ঠিক সময়ে ঠিক ডাটা এবং তার জন্য প্রযোজ্য ন্যারেটিভ আপনাকে কয়েক ধাপ এগিয়ে নিতে পারে। ভিজুয়াল এবং মৌখিক অর্থাৎ ওরাল এক্সপ্রেশনে কোন ধরনের কিওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে এবং সেখানে সবার সাথে সহমর্মিতার লেয়ার ব্যাপারটাকে ভালো মাইলেজ দেবে। ডাটাকে ঠিকমতো কমিউনিকেশন মানে এই নয় যে সুন্দর সুন্দর চার্ট এবং মিষ্টি মিষ্টি কথা বার্তা, বরং কনটেক্সটের প্রযোজ্য তা ঠিকমতো জানা, কতটুকু তথ্য শেয়ার না করলেই নয়, কার সাথে, এবং কোন কনটেক্সটে। এই ব্যালেন্সটা আসে ডাটার সঠিক ব্যবহারের অভিজ্ঞতা থেকে।