কেন ডেটা এনালাইসিস নিয়ে বইটা লিখতে চাইলাম?

ডেটাকে বুঝতে পারা

Your relevance as a data custodian is your ability to analyse and interpret it. If you can’t, your replacement is due.

― Wisdom Kwashie Mensah

মনে আছে প্রমিথিউসের কথা - মানব সভ্যতার জন্য জিউসের কাছ থেকে আগুন চুরি করার জন্য শাস্তি পেতে হয়েছিল? অথচ, এই আগুনই মানব সভ্যতার জন্য একটা বিশাল মাইলস্টোন। ব্যাপারটা গল্প হলেও এর পেছনের ধারণা মানব সভ্যতার উৎকর্ষকে ঘিরে। আজ সেই আগুনকে জ্ঞান এর সমার্থক ধারণা হিসেবে বলা যেতে পারে।

ছাপাখানা মানুষের জ্ঞানকে ছড়িয়ে দিয়েছিল বিশ্ব জুড়ে। বাষ্পীয় ইঞ্জিন মানব সভ্যতাকে সাহায্য করেছিল দূর-দূরান্তে যেতে। এরপর বিদ্যুৎ পাল্টে দিলো পুরো সমাজ ব্যবস্থা। আজকে ইন্টারনেটের বদৌলতে পুরো পৃথিবীর তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে গ্রহের আনাচে-কানাচে। তথ্য অর্থাৎ ডেটা হচ্ছে পরবর্তী গেম চেঞ্জার। এই ডেটা আসছে বিদ্যুতের মতো “গ্রিড” থেকে। মানুষের প্রতিটা কাজের পেছনের সিদ্ধান্ত যদি ডেটা নির্ভর হয়, তাহলে সেই কাজ নির্ভুল এবং সহজেই করা সম্ভব।

ডেটা নিয়ে পাঁচটা বই, বিভিন্ন ফোরামে বক্তৃতা, শতাধিক ভিডিও এবং ব্লগ পোস্ট নিয়ে কাজ করার সময় কথা হয়েছে নতুন প্রজন্ম এবং ম্যানেজমেন্ট পর্যায়ের অনেক মানুষের সাথে। আমার মনে হয়েছে - সবাই ডেটার সুবিধাগুলোর ব্যাপারে জানেন, তবে কোথা থেকে শুরু করলে একদম বেসিক তথ্য প্রযুক্তি জ্ঞান নিয়ে এগোনো যাবে, সেটা নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব রয়েছে। আমি উনাদেরকে দোষ দিতে পারি না, কারণ এই ডেটা নিয়ে প্রচুর ক্যারিয়ার ট্র্যাক তৈরি হয়েছে এর মধ্যে।

আপনি যেহেতু ডেটা নিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করতে চাচ্ছেন, সেখানে ডেটার এই দরজা দিয়ে ঢুকতে গেলে প্রথমেই দরকার ডেটাকে ঠিকমত বুঝতে পারা। ডেটাকে বুঝতে প্রয়োজন ডেটা অ্যানালাইসিস, ডেটা আসলে কি বলতে চাইছে আমাদেরকে। ডেটার ‘স্টোরি-টেলিং’ তৈরি করতে পারেন একজন ডেটা আনালিস্ট। ডেটা থেকে বিভিন্ন ধরনের বিজনেস ইন্টেলিজেন্স বের করতে প্রয়োজন বিভিন্ন টুলস। তবে, সেই টুলস ব্যবহার করতে জানার আগে প্রয়োজন সেটার পেছনে দর্শনকে বোঝা।

এই বছরের শুরুতে গুগল একটা অসাধারণ কাজ শুরু করে। ডেটা অ্যানালিটিক্স নিয়ে সব ধরনের গুঞ্জন মিটিয়ে নিয়ে আসে আটটা সাব কোর্সের একটা ‘এন্ড টু এন্ড’ কোর্সের পাইপলাইন। গুগল ক্যারিয়ার সার্টিফিকেট প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে ডেটা অ্যানালাইটিক্স কোর্সটা অডিটিং করতে গিয়ে দেখলাম - পুরো জিনিসটা মিলে যাচ্ছে আমার পার্সপেক্টিভের সাথে। ধরুন, আমি যদি একটা অনলাইন/অফলাইন কোর্স চালু করতাম, তাহলে হয়তোবা এই একই মেথডোলজির স্ট্রাকচারে কোর্সটা চালু করতাম। তবে, অনেক ছাত্র যারা বাংলাদেশ থেকে কোর্সেরা’র স্কলারশিপ পেয়েছেন - তারা কিছু কিছু জায়গায় সাহায্য চেয়েছেন। কেন তারা সাহায্য চাচ্ছেন এই ধরনের কোর্সে? আমি সাহায্য চাইলাম নিজের বাসায়।

আর্শিয়া (একাদশ) এবং নাবিল (নবম) আমার দুই সন্তান, যারা ডেটার ব্যাপার ছাড়া বাকি সব ব্যাপারেই অতি উৎসাহী। তাদেরকে অনুরোধ করে অনেক কষ্টে গুগল ডেটা অ্যানালাইটিক্স সার্টিফিকেশন কোর্সে এনরোল করিয়েছি। মজার ব্যাপার হচ্ছে, তারা আমার সাহায্য ছাড়াই জিনিসটা ধরতে পারছে। তাদের এবং অন্যান্য স্কলারশিপ পাওয়া ছাত্রদের বোঝার ধারণাটাকেও নিয়ে আসব এই বইয়ে।