কনটেন্টে যান

সিদ্ধান্তে অ্যালগরিদমের ব্যবহার

ডাটা ড্রিভেন সরকার

The powerful combination of algorithms and digital data, whether as Artificial Intelligence, Big Data Analytics or algorithmic decision-making systems, is supposed to revolutionise not only business, but how government works as well – turning it into a “data-driven government”.

-- Predictive Analytics and AI in Governance: Data-driven government

সিদ্ধান্ত প্রণয়নে অ্যালগরিদমের ব্যাপক ব্যবহার

প্রথমেই বলে নেই বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণে মানুষ অ্যালগরিদমের ব্যবহার করছে বহু বছর ধরে। এর পাশাপাশি সরকারি পর্যায়ে সিদ্ধান্তে অ্যালগরিদমের ব্যবহার চলে আসছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। হয়তোবা এই অ্যালগরিদমগুলো এই মুহূর্তে মানুষের তত্ত্বাবধানে তৈরি করে দেওয়া হলেও আস্তে আস্তে এই অ্যালগরিদম তৈরি এবং প্রণয়ন সবকিছুই চলে যাচ্ছে মেশিন লার্নিং, বিগ ডাটা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কাছে। আমার অভিজ্ঞতা তাই বলছে।

এই ‘অ্যালগরিদম’ কী?

অ্যালগরিদমকে আমরা ধরতে পারি সেই ফ্লোচার্টের মত যার মাধ্যমে আমরা যেকোনো যন্ত্রপাতির সমস্যা বের করি। ট্রাবলশুটিং ফ্লোচার্ট। টিভিতে ছবি আসছে না তবে শব্দ আসছে তাহলে করনীয় কি, টিভির ছবি ঝির ঝির করছে অথবা ছবি উপর থেকে নিচে নেমে যাচ্ছে (আমাদের সময়ের টিভির জন্য প্রযোজ্য) তখন করণীয় কি, সেটা স্পষ্ট বলা থাকে সেই ফ্লোচার্টে। এই ধরনের ফ্লোচার্টে ডানদিকে যদি “হ্যা” হয় তাহলে এক ধরনের কাজ; আর যদি “না” হয় তার জন্য আরেকটা ফ্লোচার্টের ধারণা দেওয়া থাকে। কম্পিউটার ভাষায় আমরা অনেক সময় এটাকে “ডিসিশন ট্রি” বলি। যার অর্থ হচ্ছে যদি একটা গাছের গোড়ায় সব সমস্যা নিয়ে শুরু করি তাহলে যতোই গাছের উপরে উঠতে থাকবো ততোই ডালপালা, কান্ড বাড়তে থাকবে অর্থাৎ ততো সমস্যাটা ছোট অর্থাৎ ‘ন্যারো ডাউন’ হতে থাকবে।

অ্যালগরিদম মানে সমস্যা সমাধানের রাস্তা

তাহলে অ্যালগরিদম কিভাবে সমস্যার সমাধান করবে? অ্যালগরিদমটা তৈরি করা হয়েছে একটা নীতির ওপর নির্ভর করে। এটা সেই রুলসেট অথবা নীতিমালা যার মাধ্যমে একটা নির্দিষ্ট সমস্যাকে সমাধান করা যায়। এই কাজগুলো মানুষ যেভাবে করতে পারে, কম্পিউটারকেও শেখানো হয়েছে কিভাবে এই ধরনের রুলসেটগুলো পড়ে সমস্যাগুলোকে সমাধান করার জন্য একটা একটা করে ‘ডিসিশন ট্রি’ ধরে শেষে তার একটা সমাধানে আসে। সমস্যার সমাধানে ‘ন্যারো-ডাউন’ করে নিয়ে আসে সমস্যাগুলোকে। এই রুলসেটগুলো হাতে কলমে তৈরি অথবা মেশিন জেনারেটেড হলেও পেছনের ভিত্তি একই। এটা হলে ওটা হবে, অথবা আরেকটা হবে (ইফ-দেন-এলস) অথবা এই জিনিসগুলোর মানদণ্ড হিসেবে পূর্ণ হলে তখন পরের জিনিসটা কাজ করবে। আমার ‘ট্রেড লাইসেন্স’ পাবার ক্ষেত্রে দশটা শর্ত (উদাহরণ হিসেবে বলছি) পূরণ করতে হলে সেটা পূরণ হওয়া মাত্রই ইস্যু হয়ে যাবে ট্রেড লাইসেন্স আমার নামে।

মানুষকে কিছু 'অদরকারী' সিদ্ধান্তের লুপ থেকে বের করে আনা

অ্যালগরিদমকে দিয়ে সিদ্ধান্তগুলো নেবার অর্থ হচ্ছে এখানে মানুষকে সেই লুপে রাখা হচ্ছেনা, কারণ মানুষ এ ধরনের সামান্য (রিপিটেটিভ) কাজের অনেক উপরে উঠে গেছে। আগে রাস্তার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতেন ট্রাফিক সার্জেন্ট, তবে ব্যাপারটা অনেকখানি অমানবিক হওয়ায় এই জিনিসগুলো চলে গেছে ট্রাফিক লাইট এর পেছনের অ্যালগরিদমের উপর দিয়ে। এখন আট রাস্তার মোড়েও ট্রাফিক লাইট পুরো শহরের ট্রাফিক অ্যালগোরিদমের সাথে সম্পর্ক/কোরিলেশন মেনে চালিয়ে নিতে পারে ভালোভাবেই। এটা সম্ভব না মানুষের পক্ষে। পুরো শহরকে এক অ্যালগরিদমের আওতায় চালানোর জন্য দরকার নেই মানুষকে। এটা যন্ত্রের কাজ। মানুষের সাহায্যে।

এলিভেটর এবং গাড়ির সিদ্ধান্তের অ্যালগরিদম

আগে ‘এলিভেটর’ চালাতেন আমাদের মত মানুষ। এখন এলিভেটরের ভেতরে উন্নতমানের মানুষের মত করে সিদ্ধান্ত নিতে পারা অ্যালগরিদম বসিয়ে মানুষকে বের করে ফেলা হয়েছে সেই লুপ থেকে। আমরা যখন গাড়ি চালাই, গাড়ির সামনে, পেছনে এবং দুপাশে অন্যান্য গাড়ি খুব কাছাকাছি এলেই আমাদেরকে এলার্ট করে দেয় গাড়ির ভেতরের অ্যালগরিদম। এর পাশাপাশি গাড়ির সামনে হঠাৎ করে কিছু চলে এলে চালক হিসেবে আমরা ব্রেক না করলেও সেটাও করে দিচ্ছে গাড়ির সিদ্ধান্ত নেবার অ্যালগরিদম। এর অর্থ হচ্ছে আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পাশাপাশি গাড়ির সিদ্ধান্ত নেবার অ্যালগরিদম চালু করেই আমরা গাড়ি চালাচ্ছি আরও ভালো সহযোগিতা পাওয়ার জন্য। দুই লেনের মধ্যে একটু বেশি সময় গাড়ি থাকলেই জানান দিচ্ছে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে - মানে এক লেনে আসার জন্য। মানুষের তো চারদিকে চোখ নেই, তবে এখন গাড়ির আছে সেটা। সেকারণে গাড়ির সিদ্ধান্ত নেবার কিছু ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছি গাড়ির হাতে। অটো-পাইলটে তো চলে যাবে পুরোটাই। মানে, আমাকে অফিসে নামিয়ে গাড়ি চলে আসবে বাচ্চাদের স্কুলে নামাতে। বাচ্চাদের স্কুলে নামিয়ে চলে যাবে দোকানে ডেলিভারি নিতে।

ওয়াশিং মেশিনের 'ফাজি' লজিক

ধরুন, আপনার বাসার ওয়াশিং মেশিনের কথা। সেই কবে থেকে শুনে আসছি ‘ফাজি লজিক’ যা আপনার কাজে সাহায্য করছে প্রতিনিয়ত। যেহেতু কাপড় সাবান দিয়ে ধোয়া, সাবান পানি ফেলে ভালো পানি দিয়ে পরিস্কার এবং শুকানো একটা লম্বা সময়ের ব্যাপার, আমরা সাহায্য নিচ্ছি ‘প্রি-ডিফাইন্ড’ অ্যালগরিদমের। সে কারণে কাপড় ধোয়ার শুরুতে একটা সময় ভিজিয়ে রাখা, কাপড় ধোয়া, কাপড়ের মধ্যে বারবার নতুন পানি দিয়ে কাপড় থেকে সাবান পানি ফেলে দেওয়া, এবং শেষে কাপড়গুলোকে শুকিয়ে ফেলা, এসব কিছুই করছে মানুষের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় না করেই। পুরো ৬০ মিনিট কাপড় থাকছে যন্ত্রের তত্ত্বাবধানে, মানুষের কোন ইনপুট ছাড়াই। একাজে অ্যালগরিদম ব্যবহার করছে ওয়াশিং মেশিনের ভেতরের সব সেন্সরের ইনপুট। মানুষের পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের মতো। মেশিনে কাপড় দেওয়ার পর থেকে সেই কাপড়ের ওজন মেপে কতটুকু পানি, অথবা ডিটারজেন্ট, কতবার ঘোরাতে হবে, কখন কখন পানি ছাড়তে হবে এবং নতুন পানি নিতে হবে এরকম অনেক কাজ মানুষ ছেড়ে দিয়েছে যন্ত্রের সিদ্ধান্তের উপরে।

ফেসবুকের নিউজফিড অ্যালগরিদম

অ্যালগরিদমের সর্বোচ্চ ব্যবহার হচ্ছে প্রাইভেট সেক্টরে এবং সেটার দৃশ্যমান আউটপুট পাচ্ছি তাদের বিভিন্ন সার্ভিস ব্যবহার করে। আমাজন আমাকে চেনে বন্ধুর থেকে ভালো। তার শপিং রিকমেন্ডেশন একদম ‘লা জওয়াব’। এদিকে আপনার আমার ফেসবুক নিউজফিডে কোন ‘কনটেন্ট’ আসবে, কখন আসবে, কিভাবে আসবে, কোন ক্রমে আসবে; সেগুলো সব নির্ধারণ হয় সম্পর্কিত কিছু অ্যালগরিদমের ইনপুট এর উপর ভিত্তি করে।

ফেসবুকের প্রতিটা কনটেন্ট - আপনার বন্ধুরা অথবা যারা সেই ফেসবুক পেজের সাথে আছেন তাদের বিভিন্ন ধরনের ‘ইন্টারঅ্যাকশন’ অর্থাৎ উনারা ওই কনটেন্ট নিয়ে যা করছেন সেটার একটা ‘স্কোরিং’ চলে আসছে আপনি কোন কনটেন্ট দেখবেন অথবা দেখবেন না। ফেসবুক চাইবে না এমন ধরনের কনটেন্ট নিয়ে আসতে যেটা আপনি অথবা আপনার বন্ধু কখনোই ‘ইন্টারঅ্যাকশন’ করেননি। ফেসবুক অথবা যেকোন সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম আপনাকে তাদের সাথে ধরে রাখার জন্য ধীরে ধীরে ছোট একটা পছন্দের বলয় তৈরি করে দেবে যা আপনাকে সব ধরনের কনটেন্ট দেখার জন্য বাধাগ্রস্ত করবে।

আপনি যদি কখনই একটা মতাদর্শের ব্যাপারে কোন ধরনের ‘লাইক’, ‘কমেন্ট’ বা ‘শেয়ার’ না করেন তাহলে ধীরে ধীরে সেই মতাদর্শের কনটেন্ট আপনার নিউজ ফিড থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। এর মানে এই নয় যে সেই মতাদর্শ খারাপ, তবে আপনাকে পছন্দের নিজস্ব লুপের মধ্যে রেখে দেবে। এটা একটা খারাপ দিক বটে। আপনার মনে হবে, আপনি যে ‘মতাদর্শ’ অথবা নিজস্ব যেই ‘পার্সপেক্টিভ’ লালন পালন করছেন, পৃথিবীর সবাই ওই মতাদর্শের মধ্যে আছেন। এটা একটা হতাশার ব্যাপার, কারণ আপনি মতের ভিন্নতা দেখে তৈরি হবার মানসিক সক্ষমতা হারালেন। মতের ভিন্নতাকে দাম দেবার কারণে বেশ কিছু দেশ এখনও উদ্ভাবনীতে পৃথিবী সেরা!

তবে, এ ব্যাপারগুলো থেকে আস্তে আস্তে সরে আসছে ফেসবুক। একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক ‘ভাইরাল’ কনটেন্ট কিছু শতকরা হিসেবে পাঠিয়ে দেয় আপনার ফিডে। তবে বড় বড় কোম্পানির যারা ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেন তাদের চাপে পড়ে সত্য এবং মিথ্যা তথ্যের জন্য নতুন কিছু অ্যালগরিদম ব্যবহার করে সত্য/মিথ্যা তথ্যকে তারা চমৎকারভাবে ‘ট্যাগ’ করতে পারছে। আর এই সব কিছুই ঘটছে অ্যালগরিদমের কল্যাণে। মানুষের স্পর্শ ছাড়াই।

শ্রম চাহিদা এবং বেকারদের (লেবার মার্কেট) সহায়তা অ্যালগরিদম

ইউরোপের অনেক দেশে তাদের বাজারে শ্রম চাহিদা (লেবার মার্কেট) এবং বেকারদের সহায়তা করার জন্য অ্যালগরিদম দিয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। ব্যাপারটা শুরু হয়েছে ২০১৪ সালে। কোন স্পেসিফিক মানুষটাকে এই ব্যাপারে সহায়তা করতে হবে এবং কী ধরনের সহায়তা করতে হবে সেই জায়গায় তাদের কিছু প্রশ্ন দিয়ে ওই মানুষটা শ্রমবাজারে ঢুকতে পারবে কিনা সেটা যাচাই করে। একজন মানুষ শ্রমবাজারে জন্য প্রস্তুত নাকি এখনো প্রস্তুত নয় সে ধরনের একটা ‘ক্লাসিফিকেশন’ অর্থাৎ আলাদা করে ফেলতে পারে তাদের অ্যালগরিদম দিয়ে।

স্বাস্থ্যসেবা খাতের বিলের সত্যাখান অর্থাৎ ভেরিফিকেশন

স্বাস্থ্য়খাতের বিল

The government of Berlin uses AI to identify possibly fraudulent health bills of its civil servants.

-- Predictive Analytics and AI in Governance: Data-driven government

সরকারি কর্মকর্তাদের হাসপাতাল খরচ, ঔষধ এর বিল, বিভিন্ন ডাক্তারের কনসালটেশন ফী, মেডিকেল ডায়াগনস্টিক সার্ভিসের বিল এর মধ্যে বাড়তি, ‘প্রতারণাপূর্ণ’ অথবা ‘অযাচিত’ বিল আছে কিনা সেটা দেখার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। বেশ কয়েকটি দেশের কেসস্টাডি থেকে বলছি। ব্যাপারটা খুবই সহজ কারণ, অনেক বছর ধরে একটা সিস্টেম যখন কোন ‘বিল’ সঠিক এবং কোনটা সঠিক নয় শেখে পুরনো ডাটা থেকে। এটা একটা প্যাটার্ন তবে একটা বিলের কোন অংশ সরকার কর্তৃক পরিশোধযোগ্য আর কোনটা নয় সেটা বের করছে এই মেশিন লার্নিং। কোন অপারেশনের জন্য কি ধরনের খরচ অথবা কোন ওষুধগুলোর দাম কত হতে পারে অথবা কোন হাসপাতালে কয়দিন থাকলে কত বিল হতে পারে সেটার যথেষ্ট ধারণা আছে সেই পুরনো ট্রেনিং ডাটাতে। এভাবে বেঁচে যাচ্ছে প্রচুর সরকারি অর্থ। সিস্টেমের কাজ হচ্ছে একটা প্রশ্নবোধক ‘ফ্ল্যাগ’ তোলা, এই বিলটাতে সমস্যা আছে অথবা আরেকটা বিলে এই ধরনের সমস্যা যা গ্রহীতার সাথে কথা বলে বিল পরিশোধ করা যায় খুব সহজে।

প্রেডিক্টিভপ্রেডিক অ্যানালাইসিস: সামনে দেখা

তবে যেহেতু এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, বিগ ডাটা এবং অসাধারণ কিছু ‘প্রেডিকটিভ’ অ্যালগরিদম একসাথে কাজ করছে সে কারণে পুরনো লম্বা সময়ের ডাটাতে এমন কিছু প্রজ্ঞা লুকিয়ে থাকে অর্থাৎ এমন ধরনের প্যাটার্ন যা আমরা মানুষ কখনই ধরতে পারিনি। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায় অনেক বেশি ডাটাতে এমন কিছু ধারণা দেখেছি যা সচরাচর বোঝার উপায় নেই কারণ সেই ধরনের প্যাটার্নগুলো খুব একটা ঘটে না তবে একটা প্রশাসনের জন্য এই ধরনের জ্ঞান লাভজনক। কেন ছিনতাই বাড়ছে অথবা কেন মানুষ কাজ হারাচ্ছে সেটার প্যাটার্ন এনালাইসিস করলে বেশ কিছু তথ্য থাকতে পারে যার সাথে বর্তমান শিক্ষার হালের একটা ব্যাপক কোরিলেশন আছে। কেন বাচ্চারা বাড়ি পালায় অথবা সামনে কোন কোন বাচ্চা বাড়ি পালাতে পারে সে ধরনের কোরিলেশন পাওয়া সমস্যা নয়। কাদের মানসিক সমস্যা অথবা সামাজিক এবং অর্থনৈতিক সমস্যা আছে এবং সেটা কখন আত্মহত্যার দিকে মোড় নিতে পারে সে ধরনের স্টাডি বাঁচাতে পারে প্রচুর মানুষ, ঘটনা ঘটার আগে।

বাচ্চাদের ক্ষেত্রে, কোন বাচ্চাদের রাষ্ট্রের সহায়তা লাগবে অথবা কোন বাচ্চার পরিবারের ভেতরে মাঝে মধ্যে সমস্যা হচ্ছে সেগুলো বের করাও সেরকম সমস্যা নয়। আমাদের মতো দেশে ‘সোশ্যাল সার্ভিস’ সেভাবে গড়ে না উঠলেও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এধরনের বাচ্চাদের সহায়তায় চালু হয়েছে অনেক সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান। সেখানে পুরানো ডাটাসেট থেকে জানা যায় কিভাবে বাচ্চাদের সমস্যা হয়েছিল আর সামনে কি ধরনের সমস্যা আসতে পারে। নতুন বাচ্চাদের স্কুলের পারফরম্যান্স, কয়টা ডাক্তারের ভিজিট অথবা কয়টা মিস হয়েছে, বাবা-মার পুলিশ রেকর্ড জানাতে পারে কখন একটা বাচ্চার ব্যাপারে রাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করতে পারে। প্রেডিক্টিভ অ্যানালাইসিস। ঘটনা ঘটার আগেই জানাবে।

সামাজিক অ্যালগরিদম: কী ঘটতে যাচ্ছে সামনে?

আমি যেটা বলার চেষ্টা করছি - মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম যখন অনেক কমপ্লেক্স ডাটা নিয়ে কাজ করে তখন সেখানে এমন কিছু প্যাটার্ন দেখে, যেটা সাধারণ মানুষ হিসেবে কখনো আমরা চিন্তা করতে পারিনা। তবে সেটা ঘটে। আর, সে কারণেই যত বেশি ডাটা ততবেশি প্রজ্ঞা। এ ধরনের মেশিন লার্নিং মডেল যে কোন বাচ্চার ব্যাপারে পূর্ব-সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে। হয়তোবা ‘সোশ্যাল সার্ভিস’ থেকে সেই বাসায় একটা রুটিন খোঁজখবরের ভিজিট একটা বাচ্চার জীবন বাঁচাতে পারে। ডাটা বলছে, আমাদের মতো দেশে যেখানে শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক অবক্ষয় বাড়ছে সেখানে ব্যাপারটাকে আরো খারাপের দিকে নিয়ে যাচ্ছে সামগ্রিকভাবে মানসিক সমস্যা। এটা বাড়ছে দ্রুতগতিতে। এই ব্যাপারগুলোকে এখন ধরা যাচ্ছে বিভিন্ন ঘটনাগুলোতে যা আগে অনেক কম ছিল। মানসিক সমস্যাও এখন একটা বড় সমস্যা যদি আগে থেকে না ধরা যায়। এখন দরকার সামাজিক অ্যালগরিদম, সমস্যা হবার আগেই যাতে সেটাকে ঠিক করা যায়।