কনটেন্টে যান

লুকিং ইস্ট, কোথায় যাচ্ছি আমরা?

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং শিক্ষা

“When AI education prevails,” founder Derek Li says, “human teachers will be like a pilot.”

-- MIT Technology Review, Jan 2020

এমআইটি’র ‘টেকনোলজি রিভিউ’ ম্যাগাজিনটা শিক্ষা নিয়ে লিখেছে বার কয়েক। সেখানে এই (২০২০) বছরের শুরুতে ‘অসাধারণ’ একটা ব্যাপার নিয়ে আলাপ করেছেন তারা। শিক্ষায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, এবং কারা এগিয়ে আছে? কারা বিনিয়োগ করছে পাগলের মতো - সেই ধারনায়? সেই শিক্ষা নিয়ে গল্প শেষের পর্বে।

বিশেষজ্ঞরা বারবার বলছেন, এই একুশ শতক হবে শিক্ষার জন্য একটা বড় মাইলস্টোন - কারণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ব্যবহার করা হচ্ছে শিক্ষার কাজে। যারা শিক্ষা নিয়ে গবেষণা করছেন গত শতক ধরে, বিভিন্ন ‘বেস্ট প্র্যাক্টিস’ নিয়ে তারা কাজ করলেও চীন বসে নেই সেখানে। গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা - চীনে শিক্ষার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাতে এতো বেশি বিনিয়োগ হয়েছে, সেখানে এ ব্যাপারে প্রজ্ঞার কমতি নেই। চীনের পাশাপাশি অন্যান্য দেশে যারা শিক্ষার উপর জোর দিয়ে থাকেন, তাদের নতুন ধরনের ‘কারিকুলাম’ দেখলে মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড়। বোঝা যায় এর পেছনে রয়েছে অনেক গবেষণা।

‘রি-ওয়ারিং এডুকেশন’

এডুকেশন, রিইনভেন্টেড

Rewiring education ultimately means changing the way we teach the things we want today's students to learn. It should no longer be about distributing content and memorizing meaningless facts, but about teaching kids to combine new understandings of these facts with critical and creative thinking skills that ultimately lead them to discover, understand, and create new things.

-- Rewiring Education: How Technology Can Unlock Every Student’s Potential, John D. Couch

আমার লিংকগুলো বলছে - সিলিকন ভ্যালিতে অনেকগুলো ‘স্টার্টআপ’ এই শিক্ষা নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। গত ৩-৫ বছর ধরে ‘চ্যান এবং জুকারবার্গে’র শিক্ষা উদ্যোগ ছিল দেখার মতো, বিশেষ করে ‘স্কুলিং সিস্টেম’ উন্নয়নে। ‘বিল এবং মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন’ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে শিক্ষার সবচেয়ে বড় পরিপূরক হিসেবে অভিহিত করেছেন। এর পাশাপাশি, অ্যাপেল এর শিক্ষা সম্পর্কিত ভাইস প্রেসিডেন্ট জন কাউচ, এটা নিয়ে অনেকগুলো কাজ শুরু করেছেন। তার ২০১৮ সালের লেখা বই ‘রি-ওয়ারিং এডুকেশন’ আমাকে মুগ্ধ করে রেখেছে। ‘কার্নেগি মেলন’ ইউনিভার্সিটিতে এ ধরনের কিছু প্রোটোটাইপ নিয়ে কাজ হয়েছে যেগুলোর মডেল নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিশ্বব্যাপী।

বিশেষজ্ঞরা এই শিক্ষা নিয়ে কাজ করলেও এ ব্যাপারে ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা’র এই দৌড়াদৌড়িকে কিছুটা বেশি মাত্রায় বলে অভিহিত করছেন। তবে, আমার ধারণা হচ্ছে - কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যেহেতু শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের অনেক বেশি ধারণা দিচ্ছে প্রথাগত ধারণার ‘স্কুলিং’ থেকে, সেকারণে শিক্ষার ভেতর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আরো বেশি যোগ হবে বৈকি। সেটার ফলাফল আমি দেখছি অনেকগুলো লার্নিং ম্যানেজমেন্ট টুল দেখে। এক কথায় অসাধারণ!

তবে, এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে চীনের বাড়াবাড়ির কারণগুলো বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেছি। চীন যেভাবে পুরো বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবার ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে, সেখানে চীনের রাজনৈতিক নেতৃত্ব এ ব্যাপারে ভালো সহযোগিতা করছে। কারণ, চীন দেখেছে শিক্ষার ক্ষেত্রে পুরো বিশ্বকে নেতৃত্ব না দিলে তারা কখনোই বিশ্বায়নে এগোতে পারবে না।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং কর রেয়াত

যে প্রথম কারণটা চীনের শিক্ষা-ব্যবস্থায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার করার জন্য সাহায্য করছে, সেটা হচ্ছে, শুরুতেই তাদের কর ব্যবস্থাতে ব্যাপক ছাড় দিয়েছে এই সেক্টরে। যারা শিক্ষায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ঠিকমতো ব্যবহার করতে পারবে - তাদের জন্য প্রচুর কর রেয়াতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর সে কারণেই চীন এবং পৃথিবী থেকে অন্যান্য স্টার্টআপ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ব্যবহার করে একটা স্কুলের শিক্ষার্থীর পাশাপাশি শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ এবং একটা স্কুলের ম্যানেজমেন্ট কিভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে করা যায় সে ব্যাপারে বিশেষ জোর দিচ্ছে সবাই। ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট ফার্মগুলো এ ব্যাপারটিকে খুব গুরুত্বসহকারে নিয়েছেন।

দ্বিতীয় ব্যাপারটি হচ্ছে - চীনে শিক্ষার প্রতিযোগিতা একটা ভয়ঙ্কর জায়গায় চলে গেছে। প্রতিবছর স্কুলের বাচ্চারা যখন কলেজে ভর্তি হতে যায় তখন তার জন্য যে এন্ট্রান্স পরীক্ষা, ‘গাওকাও’ সেই পরীক্ষাতে ভালো না করতে পারলে একটা পরবর্তীতে ভালো জীবনের সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে যায়। আমাদের শিক্ষার্থীদের বাবা-মাদের মতো এই পরীক্ষাতে ভালো করার জন্য যত টাকা প্রয়োজন ততো টাকা বিনিয়োগ করার জন্য তাদের বাবা’মায়েরা একপায়ে খাড়া।

তৃতীয়তঃ চীন বিশাল বড় দেশ হিসেবে মানুষের ব্যাক্তিগত ডাটা নিয়ে সবাই খুব একটা চিন্তিত নয়। সে কারণে সাধারণ জনগণের শিক্ষাসংক্রান্ত প্রচুর ডাটা রয়েছে ওই দেশের উদ্যোক্তাদের কাছে। এর ফলে এই উদ্যোক্তা এবং বিনিয়োগকারীরা ডাটাগুলোকে ব্যবহার করে তাদের দরকারি অ্যালগরিদমগুলোকে ঠিকমতো ‘ট্রেনিং’ করিয়ে আরো ভালো ‘অ্যাক্যুরেসি’ আনতে পারে। যেহেতু শিক্ষার্থীদের বাবা-মা তাদের চোখের সামনে প্রযুক্তির উৎকর্ষ দেখছেন - সে কারণে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সম্পর্কিত ডাটা শেয়ার করতে তাদের সেরকম আপত্তি নেই। এই ব্যাপারটা অন্যান্য দেশ থেকে ভালো কাজ দিচ্ছে এই ডাটা মাইনিং এর সুফল হিসেবে।

একেকজন শিক্ষার্থী ভিত্তিক ‘পার্সোনালাইজেশন’

ডাটা ব্যবহারে এ ধরনের সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে চীনের বেশ কয়েকটা ‘স্টার্টআপ’ শিক্ষার একদম শুরু থেকে এন্ট্রান্স পরীক্ষা পর্যন্ত প্রতিটা শিক্ষার্থীর জন্য আলাদা আলাদা প্রেডিকশন এবং শিক্ষার্থী ভিত্তিক ‘পার্সোনালাইজেশন’ কাজটাকে অন্য লেভেলে নিয়ে যাচ্ছে। টেকনিক্যাল স্টার্টআপগুলো ডাটার এই সুফলকে একাডেমিক পাবলিকেশন, এবং আন্তর্জাতিক কোলাবরেশনের মাধ্যমে বাজারজাতও করছেন বিভিন্ন দেশে। পাশাপাশি, চীন থেকে প্রচুর পুরস্কার বাগিয়ে নিচ্ছেন এই উদ্ভাবনা দিয়ে।

এই কৌশল বিশাল কাজে দিয়েছে এ ধরনের স্টার্টআপগুলোকে। পুরো দেশব্যাপী, বিশেষ করে ২০০ শহরে কয়েক হাজারের মতো লার্নিং সেন্টার - যেখানে বেশ কয়েক লক্ষ শিক্ষার্থী রেজিস্টার করেছে। এই টেকনোলজিক্যাল উদ্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে প্রচুর টাকা তুলছেন বাজার থেকে। বিভিন্ন সিরিজ ফান্ডিং ব্যবহার করে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকটা স্টার্টআপ ইউনিকর্ন স্ট্যাটাস পেয়েছেন যাদের ভ্যালুয়েশন একেকটার ১০০ কোটি ডলারের উপরে।

এ ধরনের টেকনোলজিক্যাল স্টার্টআপগুলো ২০১৭ সালের দিকে নিজের টাকায় তাদের সিস্টেমকে উন্মুক্ত করে দিয়েছিল অনেকের ব্যবহারের জন্য। ওই সময়ে শিক্ষার্থীরা এই পদ্ধতি ব্যবহার করে এর থেকে সুফল পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন তখনই। প্রথাগত শিক্ষা থেকে এই শিক্ষায় তারা কোথায় কোথায় ভালো করছে, সেই ব্যাপারগুলো নিয়ে বের হয়েছে অনেকগুলো রিসার্চ পাবলিকেশন। এর সাফল্য দেখে চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনেকগুলো স্কুল নিজে থেকেই কাজ করছে নিজ নিজ দেশের প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড এর কারিকুলাম নিয়ে।

এর মধ্যে একটা জিনিস বুঝতে পেরেছি আমরা, ভবিষ্যতে মানুষ প্রথাগত ‘রুটিন’ অর্থাৎ যে কাজগুলো প্রতিদিন আমরা করি - অফিস, আদালত বা নিজের বাসায়, সেগুলোকে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কাছে। যেমন, আমার ক্যালেন্ডার অনেক কাজ করে ফেলে নিজে থেকে। মানুষের কাছে থাকবে সৃজনশীলতা, মানুষের মধ্যে সহযোগিতা অর্থাৎ কোলাবোরেশন, মানুষের মধ্যে কমিউনিকেশন অর্থাৎ যোগাযোগ, এবং শেষে - ‘প্রবলেম সলভিং’ অর্থাৎ কিভাবে সমস্যার সমাধান করতে হয়।

এগুলো ছাড়া বাকি সবকিছুই চলে যাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অর্থাৎ যন্ত্রের কাছে। এখন, মানুষ আস্তে আস্তে নিজেকে যুক্ত করছে অটোমেশনের সাথে, এর ফলে একুশ শতকের ক্লাসরুমগুলো হবে প্রতিটি শিক্ষার্থীর নিজস্ব স্বত্তার ভিত্তিতে, সে কোন জিনিসটা পছন্দ করে, তার নিজস্ব স্ট্রেন্থ অর্থাৎ শক্তি কোথায় যাতে সে নিজেকে ঠিকমতো তৈরি করে নিতে পারে। শিল্প বিপ্লবের সময় যে ধরনের শিক্ষার প্রচলন ছিল সেটা বিলুপ্ত হচ্ছে আস্তে আস্তে।

চীন এখন যা করছে সেটা নতুন কিছু নয়, কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই ধরনের ‘পার্সোনালাইজড’ শিক্ষাব্যবস্থা শুরু করেছিল ১৯৭০ সালের দিকে, কম্পিউটার দিয়ে। সেই ধারণাকে নতুন উদ্ভাবনায় নিয়ে এসে অনেকগুলো শিক্ষাভিত্তিক কোম্পানি ১৯৮২-৮৪ সাল থেকে কাজ করে আসছে। এটারই ফলাফল হচ্ছে ‘অ্যাডাপটিভ লার্নিং সিস্টেম’ যা নিয়ে বিস্তর আলাপ করেছি আগে।

‘অ্যাডাপটিভ লার্নিং সিস্টেম’ এবং পার্সোনালাইজড লার্নিং

আমার ব্যক্তিগত ধারণা হচ্ছে ‘অ্যাডাপটিভ লার্নিং সিস্টেম’ থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আরও ভালো করবে - কারন একটা ক্লাস রুমের কাজগুলোকে যদি ঠিকমতো ভাগ করে ফেলি, তাহলে শিক্ষকদের প্রচুর প্রশাসনিক কাজ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ঠিক করে দেবে ‘হাউসকীপিং’ হিসেবে। এই সময়ে, শিক্ষকগণ প্রতিটা শিক্ষার্থীদের ড্যাশবোর্ড ধরে একেকজনের চাহিদা অ্যানালাইসিস করতে পারবেন। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রতিটা শিক্ষার্থীদের পারফরম্যান্স আলাদা করে ট্র্যাকিং করে শিক্ষকদের ক্ষমতায়ন করবে - যাতে প্রতিটা শিক্ষার্থীকে ধরে ধরে তারা বুঝতে পারেন কাকে কিভাবে শেখানো যাবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সর্বশেষ গোল হচ্ছে - অ্যাডাপটিভ লার্নিং এর পরে সবাইকে আলাদাভাবে পার্সোনালাইজড শিক্ষা প্রদান।

আমাদের এই অ্যাডাপটিভ এবং পার্সোনালাইজড লার্নিং এর মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য আছে। ‘অ্যাডাপটিভ লার্নিং’ হচ্ছে প্রতিটি শিক্ষার্থীর ব্যাপারে জানা - তারা কতটুকু একটা ব্যাপারে জানে এবং তারা কতটুকু জানে না। সেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বের করতে পারবে - শিক্ষার্থীরা আসলে কি শিখতে চায় এবং কিভাবে শিখলে তাদের জন্য ভালো হবে। ইংরেজিতে একটা শব্দ আছে ‘অর্কেস্ট্রেশন’ মানে কিভাবে একটা জিনিসকে ঠিকমতো ‘সুসমন্বয়সাধন’ করবে। সেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এই পুরো জিনিসকে ‘অর্কেস্ট্রেশন’ করবে যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য দরকারি উৎসাহ এবং সময় বের করবে যাতে তারা সেই কাজে এগিয়ে যেতে পারে। এটাই ‘পার্সোনালাইজড’ লার্নিং এর একটা বড় অংশ।

এতে যখন শেখাটা প্রতিটা শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা গতিতে হবে তখন প্রতিটা শিক্ষার্থীদের নিজস্ব শেখার ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে ভিন্ন ভিন্ন সময় নিয়ে তারা একই বিষয় পড়তে পারবে। সেখানে যদি এ রাস্তাটা ‘পার্সোনালাইজড’ হয় তাহলে একেকটা শিক্ষার্থীর জন্য একেক ধরনের উৎসাহ এবং ‘মোটিভেশন’ একই বিষয়ের উপরে এগিয়ে নেবে। কোন ছাত্রীর জন্য কি ধরনের ‘ফরম্যাট’ প্রয়োজন অর্থাৎ কেউ হয়তোবা ভিডিওতে ভালো বোঝে অথবা আরেকজন লেখা পড়ে সেই ধরনের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে।

শিক্ষকের হাতে টুল হিসেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

এখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শিক্ষার্থীদের সাহায্য করবে যাতে তারা নিজের শিক্ষার পুরো মেকানিজমটা বুঝতে পারে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তাদেরকে সাহায্য করবে - কিভাবে তারা নিজের বিষয়টাকে খুঁজে পাবে যাতে সেই বিষয়টা শেখার জন্য তাকে আর কি জিনিস শিখতে হবে? কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সময়েও একটা ক্লাসরুমে শিক্ষক থাকবেন তবে সেই শিক্ষকের হাতে টুল হিসেবে থাকবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। তবে, জ্ঞান চর্চা করা এবং এর পাশাপাশি একটা স্কিলসেট নিজের মত করে শিখে নেওয়া, এর পাশাপাশি একজন শিক্ষার্থী তার সারাজীবন ধরে কোন শিক্ষা তাকে আসলে শিক্ষিত করে তুলবে সেটা অনেকটাই সহজ করে নিয়ে আসবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।

শিক্ষক এবং বিমানের পাইলট

যে জিনিসটা বোঝা গেছে, যখন শিক্ষায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চলে আসবে তখন মানুষ শিক্ষক হবেন একেকটা বিমানের পাইলট এর মতো। উনারা পাইলটদের মতো বিশাল ড্যাশবোর্ড নিয়ে দেখবেন, কোথায় কোন অ্যালগরিদম পুরো ক্লাসটাকে চালাচ্ছে, কারো কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা? এখন যেমন একটা বিমানকে প্রায় পুরো সময় ধরে অটোপাইলটে চালানো যায়, সেখানে পাইলট এর মতো কোন অ্যালার্ট আসলে সেখানে দেখবেন কি ধরনের সমস্যা হচ্ছে এবং সেটাকে কিভাবে মেটানো যায়? সেখানে মানুষের রোল হবে অনেকটাই ইমোশনাল যোগাযোগের ভেতরে।

মানুষের উদ্ভাবনা আসে অনেকগুলো দৃষ্টিকোণ থেকে। বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি মানে আলাদা আলাদা আইডিয়া, যা এই জিনিসগুলোকে আরো পোক্ত করে নিয়ে আসছে এক জায়গায়। সে কারণে, যখন অনেকগুলো ভাষা জানেন আপনি এবং তার ফলে আরো অনেক মানুষের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন - তখন আরো অনেক বেশি আইডিয়াকে যোগসুত্র হিসেবে ধরে নিতে পারেন আপনি। সেখানে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এধরনের লার্নিং প্লাটফর্মে পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি আরো অনেক ধরনের আইডিয়া নিয়ে আসতে পারবে একটা একীভূত প্লাটফর্মে। তখনই মানুষ হয়ে উঠবে অজেয়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে পাশে রেখে।