কনটেন্টে যান

দেশের কাজগুলোর অগ্রগতি জানবো কিভাবে?

ড্যাসবোর্ড দিয়ে কাজ মাপতে পারা, এর সুফল

দরকার সবারই

Dashboards are becoming an important means of tracking key performance indicators for private, nonprofit, and public organizations. Broadly, dashboards summarize “key performance metrics and underlying performance drivers”.

-- Pauwels, et al., 2009, p. 177, (O’Reilly, 2009)

অনেক দেশের বেশ কিছু অপারেটরের ‘সিকিউরিটি অপারেশন সেন্টার’ দেখেছিলাম কাজের ফাঁকে ফাঁকে। একটা নেটওয়ার্ক (অনেকটাই মানুষের শরীরের মতো) কিভাবে এবং কেমন চলছে - তার ‘হেলথচেক’ দেখলে বোঝা যায় সেই নেটওয়ার্কটা কেমন ‘পারফর্ম’ করবে সামনে। কিভাবে একটা নেটওয়ার্কের ওপর বাইরে থেকে ‘অ্যাটাক’ আসছে সেটা দেখলে মনে হয় এটা একটা সামরিক কমান্ড সেন্টার। হাজারো ড্যাসবোর্ড, একেকটাতে একেকটা স্ট্যাটাস। সাধারণ মানুষ মাত্রই বুঝতে পারবেন সেই ভিজুয়ালাইজেশনগুলো। যেটা দেখা যায়, সেটা মাপা যায় - ফলে সেটাকে আরো ভালো করার স্কোপ থাকে।

অনেক দেশের বেশ কিছু অপারেটরের ‘সিকিউরিটি অপারেশন সেন্টার’ দেখেছিলাম কাজের ফাঁকে ফাঁকে। একটা নেটওয়ার্ক (অনেকটাই মানুষের শরীরের মতো) কিভাবে এবং কেমন চলছে - তার ‘হেলথচেক’ দেখলে বোঝা যায় সেই নেটওয়ার্কটা কেমন ‘পারফর্ম’ করবে সামনে। কিভাবে একটা নেটওয়ার্কের ওপর বাইরে থেকে ‘অ্যাটাক’ আসছে সেটা দেখলে মনে হয় এটা একটা সামরিক কমান্ড সেন্টার। হাজারো ড্যাসবোর্ড, একেকটাতে একেকটা স্ট্যাটাস। সাধারণ মানুষ মাত্রই বুঝতে পারবেন সেই ভিজুয়ালাইজেশনগুলো।

ধারণা করুন, আমাদের মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর গ্রামীণফোনের কথা। এই বিশাল নেটওয়ার্ক চালাতে তাদের অফিসে রয়েছে এধরণের ‘সিকিউরিটি অপারেশন সেন্টার’ - যা দিয়ে উনারা দেখতে পারেন পুরো নেটওয়ার্ক কিভাবে চলছে, প্রতি সেকেন্ডে। শত শত ড্যাশবোর্ড বলছে মানে জানিয়ে দিচ্ছে নেটওয়ার্কের প্রতি মুহূর্তের অবস্থা। সেভাবে চিন্তা করুন, একটা দেশকে চালানোর জন্য এরকম ড্যাশবোর্ডের প্রয়োজনীয়তার কথা। যেটা দেখভাল করবে - জনগণের সমস্যা প্রতিনিয়ত, এর পাশাপাশি প্রতিটা প্রজেক্ট কিভাবে চলছে, কোথায় আটকে আছে অথবা সামনে কি কি সমস্যা হতে পারে?

আমার অভিজ্ঞতায় সরকারের ভিতরে এ ধরনের ড্যাশবোর্ড এবং তার সংক্রান্ত যতো অ্যানালিটিক্স ব্যবহার করা দেখেছি (দেশে নয়) - সেগুলোর কিছু বড় সুফলগুলো নিয়ে আলাপ করা যেতে পারে।

১. সঠিক (ভুল নয়) সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা

যেহেতু সরকারি সংস্থাগুলো অনেক ধরনের প্রযুক্তির সাহায্যে প্রচুর ডাটা জেনারেট করে রিয়েল টাইমে, ফলে এ ধরনের সংস্থাগুলো বিজনেস অ্যানালাইটিক্স ব্যবহার করে খুব সহজে নিজেদের প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতে পারে অল্প সময়ে, এবং সুচারুভাবে। বর্তমানে যে ধরনের বিজনেস অ্যানালিটিক্স চলছে প্রাইভেট সেক্টরে সেগুলো সমানভাবে সরকারের ডাটাসেটগুলোর উপর প্রযোজ্য। সত্যি বলছি।

২. অদক্ষতা খুঁজে অর্থাৎ ‘আইডেন্টিফাই’ করা এবং সেটাকে কমিয়ে নিয়ে আসা

সরকারের ছোট ছোট প্রশাসনিক জোন এবং স্থানীয় সরকার তাদের বিভিন্ন প্রজেক্টের মধ্যে আন্তঃসংযোগ এবং ‘ইন্টার ডিপেন্ডেন্সি’ দেখা যায় যেহেতু সেগুলো বেশ কয়েকটা ড্যাশবোর্ড হয়ে আসছে ফাইনাল ড্যাশবোর্ডে - সে কারণে প্রজেক্টগুলোর ভিতর ‘অদক্ষতা/ডেলিভারি না দিতে পারা’ খুব সহজেই দেখা যায়। সেই অদক্ষতাকে ঠিক মত ধরতে পারলে সেটাকে কমিয়ে আনা সম্ভব।

৩. বাহুল্য খরচ, এজেন্সিগুলোর মধ্যে টাকা এবং রিসোর্সের অপব্যবহার, জালিয়াতি রোধ এবং ভুল সিদ্ধান্ত কমিয়ে আনা

বিশ্বাস এবং কাজের হিসেব

Having a publicly available performance dashboard is one the best ways that local governments can build trust with the community while engaging employees.

-- 8 Local Government Public Dashboard Examples, Envisio

সরকারের মধ্যে কোথায় কোথায় একই কাজ কয়েক জায়গায় (ডুপ্লিকেট) হচ্ছে সেটাকে খুঁজে বের করে তার ভেতরে প্রসেস অপটিমাইজেশন, এর পাশাপাশি ফান্ডের অপব্যবহার এবং বিভিন্ন ধরনের জালিয়াতির মাধ্যমে কোথায় কোথায় সরকারি টাকার শ্রাদ্ধ হয়, সেগুলোকে বের করা যায় এই ধরনের ড্যাশবোর্ডগুলো দিয়ে। যেসব সিদ্ধান্তগুলো আগের বছরগুলোতে টাকা পয়সা নষ্ট করেছে, এবং যেগুলো থেকে খুব একটা আউটপুট আসেনি সেগুলোকে ঠিকমতো সনাক্ত করে বাদ দেয়া যায় এধরনের ড্যাশবোর্ড দিয়ে।

৪. সরকারি সংস্থার মধ্যে আইন শৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তা বাহিনী কার্যক্রম এবং জরুরি সেবার অ্যানালিটিক্স নিয়ে কাজ

এ ধরনের ড্যাশবোর্ড নিরাপত্তা বাহিনী এবং জরুরী সেবা সার্ভিস প্রদানকারী সংস্থাগুলোকে ক্রাইম প্যাটার্ন এবং অবৈধ কাজের অনেক ধরনের অ্যাক্টিভিটি শনাক্ত করতে পারে সময়ের থেকেই। এ ধরনের ড্যাশবোর্ড থেকে রিপোর্ট নিয়ে স্থানীয় সরকার সরাসরি কাজ করতে পারে নিজ নিজ এলাকায় জনগণের স্বার্থে। ভুল মানুষকে হয়রানি না করে সঠিক অপরাধীকে বের করার জন্য প্রচুর ধারণা আসে এ ধরনের স্পেশালাইজড ড্যাশবোর্ড থেকে।

৫. সরকারি সার্ভিস ডেলিভারিতে দক্ষতা এবং স্বচ্ছতা আনয়ন

এধরনের ড্যাশবোর্ড দিয়ে যেভাবে সরকারের ভেতরের ‘ইন্টারনাল’ প্রশাসন চালানো যায় - কেপিআই ভিত্তিক, সেভাবে সরকারের ভেতরের কাজের ফলাফল প্রকাশ করা যায় জনমুখী ড্যাশবোর্ডগুলোতে। এই ড্যাশবোর্ডগুলো থেকে সরাসরি দেখতে পাবে জনগণ, - যেখানে তারা পরিমাপ করতে পারবে কোন অফিসগুলো এগিয়ে আছে জনসেবায়। তৈরি হবে একধরনের জনমুখী প্রতিযোগিতা। এটা সরকারি অফিসগুলোর কাজের ভেতরে স্বচ্ছতার প্রথম ধাপ। এর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ‘কী পারফরম্যান্স ইন্ডিকেটর’ এবং সরকারি সার্ভিস ডেলিভারি ম্যাট্রিক্স ব্যবহার করে বিভিন্ন সরকারি সার্ভিসের ডাটা যেমন কত ট্যাক্স জমা পড়ছে প্রতিদিন, কোন কোন রাস্তা ঠিক হয়েছে সময়মতো। জনগণের বিভিন্ন সার্ভিসগুলোর স্ট্যাটাস, কোথায় কোন জায়গায় কার কোন ফাইল আটকে আছে, সরকারের আয় এবং খরচ এবং ভর্তুকির (সব জায়গায় নয়) ড্যাশবোর্ড যা স্থানীয় সরকার অনুযায়ী ভাগ করে দেখানো হবে।

একীভূত ড্যাশবোর্ড

কাজ করে তো?

When President Barack Obama took office, he said, “The question is not whether government is too big or too small but whether it works.” But how do you know what works and what doesn’t?

-- Use of Dashboards in Government, Fostering Transparency and Democracy Series

সরকারি একীভূত ড্যাশবোর্ডগুলো সরকারকে এমনভাবে ক্ষমতায়ন করে যাতে সে নিজের পারফরম্যান্স ঠিকমতো হিসেব করে - এর জন্য কি কি ধরনের রিসোর্স দরকার - কোথাও কম বা কোথাও বেশি সে ধরনের এডজাস্টমেন্ট করে ঠিক করে কিভাবে ফাইনাল আউটকামে যাওয়া যায়। ফাইনাল আউটকাম হচ্ছে সরকার তার নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে যে ধরনের উদ্দেশ্য ঠিক করে রেখেছেন সেই উদ্দেশ্যগুলো থেকে সরকারি কাজের অগ্রগতি কত দূরে বা কত কাছে আছে সেটার একটা ভালো ভিজুয়ালাইজেশন/ইনসাইট পাওয়া যায় এই ড্যাশবোর্ড থেকে।