কনটেন্টে যান

এক সংস্থা, তবে গ্রুপ ভিত্তিক আলাদা মাথা

প্রেডিকশন

Tax authorities across some countries are using AI models along with analytics to predict higher-risk tax payers. The result is increased revenue collection and lower tax avoidance.

-- How AI can help governments manage their money better, Ernst & Young Global Limited

আয়কর ধারণার পূর্বাভাস

কর সংস্থাগুলো সবচেয়ে ভালো ফলাফলের জন্য স্পেসিফিক কিছু নাগরিকদের অথবা সংস্থাগুলোকে বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ করে তাদের সাথে কিভাবে এবং কোন পদ্ধতিতে আলাদাভাবে যোগাযোগ করে যথাযথ আয়কর নিয়ে আসা যায় তার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সিস্টেমগুলোকে ব্যবহার করতে পারে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেলগুলো হবে পূর্বাভাস দেবার জন্য একটা অসাধারণ টুলকিট।

আমার পড়া কেস স্টাডিতে একটা আয়কর সংস্থার একজন বিশ্লেষক উল্লেখ করেছেন যে - কোন ব্যক্তি অথবা একটা সংস্থার যদি "শুরুতে আয়কর পরিশোধ না করার ট্র্যাক রেকর্ড থাকে, এদিকে তাদের আর্থিক তথ্য যদি বলে যে তারা বেশ ভাল করছে" তাহলে একটি বিশেষভাবে ডিজাইন করা মডেল বলতে পারে এই সংস্থা অথবা ব্যক্তির ‘ফিনান্সিয়াল স্টেটমেন্ট’ ভালো দেখাচ্ছে তবে তারা আয়কর সময়মতো দেবার জন্য আলাদাভাবে কাজ করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে, গতানুগতিক চিঠি চালাচালির মধ্যে না গিয়ে তাদের সাথে বসে কিভাবে একটা সময়ের মধ্যে প্রণোদনা দিয়ে একটা ভালো পরিমাণের টাকা উদ্ধার করে নিয়ে আসা যায় - সেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সাহায্য করতে পারে।

মানুষের 'আচরণ' বিজ্ঞান এবং ডাটা মাইনিং

এমনকি নাগরিকদের এবং সংস্থাগুলোর মধ্যে স্বল্প ঝুঁকিপূর্ণ স্কোর করছেন এই নতুন মডেলে, তাদের সাথে যোগাযোগের কি ধরনের প্রক্রিয়া হতে পারে - সেগুলো আসতে পারে আচরণ বিজ্ঞান এবং ডাটা মাইনিং এর ফলাফল থেকে। এর পাশাপাশি আয়কর প্রদানকারী সেই নাগরিক এবং সংস্থাগুলোর ফিরতি প্রতিক্রিয়া প্রতিবছর মডেলে ইনপুট দিয়ে রাখলে এই মডেলগুলো একদম মানুষের মত করে আচরণ করতে পারবে। আমার ‘ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং’য়ের অভিজ্ঞতা বলে, মানুষের আচরনের অনেকটুকুই অনুকরণ করতে পারছে বর্তমান কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মডেলগুলো।

মানুষের বেহাভিয়ারিয়াল সাইন্স অর্থাৎ কোন অবস্থায় বা কোন সময়ে কোন ব্যক্তি অথবা সংস্থাগুলো এই আয়কর জমা দেওয়ার ব্যাপারে ‘ভালো রেসপন্স’ অর্থাৎ প্রতিক্রিয়া দেখাবে সেটা খুঁজে বের করতে হবে আগে। সেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ভাল ফলাফল দিচ্ছে অন্যান্য সেক্টরে। সেই হিসেবে - কোন মানুষটা কবে, কোন জিনিস কিনবে - সেটা বের করা গেলে আয়করও বের করা সম্ভব। সেই ধারণা নিয়ে কাজ করছে অনেকগুলো আয়কর আদায়কারী সংস্থা। মানুষের আচরণগত বিজ্ঞান বলে, মানুষ যে কোনো একটা ট্রিগার পয়েন্টে কাজ করে। এক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ভালোভাবে জানাতে পারবে সেই ট্রিগার পয়েন্টগুলো কখন, কোথায়, এবং কিভাবে লাগাতে হবে।

কোম্পানিগুলোর ট্যাক্স এড়ানোর বিরুদ্ধে সম্ভাব্য পূর্বাভাস

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আয়কর আদায়কারী সংস্থাগুলোকে একটা রাষ্ট্রকে চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় আয় আনতে গিয়ে একজন ব্যক্তি এবং কোম্পানিগুলোর ট্যাক্স এড়ানোর বিরুদ্ধে লড়াই করার সম্ভাব্য পূর্বাভাস তৈরি করে দেয়। আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি, এ ধরনের মডেলগুলো প্রায়শই নির্দিষ্ট সেক্টর এবং একই ধরনের কোম্পানিগুলোকে মনে রেখে প্রশিক্ষিত হয় এবং সেখানে অডিটররা প্রতিনিয়ত ঠিকমতো ইনপুট দিলে এই মডেল অসাধারণভাবে কাজ করবে।

ক্লাস্টারিং মেথড, একেক সেগমেন্টে সাদৃশ্যপূর্ণ করদাতা

ডাটা নিয়ে অন্য সেক্টরে কাজ করতে গিয়ে যেটা বোঝা গেছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে কোন কোম্পানি ঠিকমতো চলছে কিনা সেটারও ধারণা পাওয়া যায় এই মডেলগুলো থেকে। অনেকগুলো আয়কর আদায়কারী এজেন্সি ক্লাস্টারিং মেথড ব্যবহার করে, যে সকল করপ্রদানকারী সংস্থা এবং ব্যক্তিগুলো একই ধরনের - তাদেরকে নিজ নিজ সেগমেন্টে ভাগ করে সরাসরি তাদের সাথে কাজ করতে পারছে। অর্থাৎ, কোন করদাতা একে অপরের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ তা বোঝার জন্য এবং তাদেরকে নতুন উপায়ে সেগমেন্ট হিসেবে ভাগ করার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নতুন সিস্টেমগুলো ব্যবহার করে কিছু সংস্থা ক্লাস্টারিংয়ের পদ্ধতিগুলোকে পরীক্ষা করে দেখছে।

ডাটার ভেতরের প্যাটার্ন

Some [Tax] agencies are also experimenting with clustering methods, using AI systems to understand which taxpayers are most similar to each other, and to segment them in new ways. Social network analysis is helping to uncover complex VAT frauds that span multiple actors, and AI can be used to augment this as datasets become larger and more complex

-- Advanced Analytics for Better Tax Administration, OECD iLibrary, 13 May 2016

সোশ্যাল মিডিয়া এবং মডেলের সংমিশ্রণ

এই মুহূর্তে সোশ্যাল মিডিয়া এনালাইসিসে কোম্পানিগুলোর জটিল ভ্যাট জালিয়াতিগুলি উদঘাটনে সহায়তা করছে এবং অন্য জায়গায় ঠিকমত আয়কর দিচ্ছে কিনা সেগুলো বের করা যাচ্ছে খুব অল্প সময়ে। পৃথিবীর প্রায় প্রতিটা কাজের একটা কোরিলেশন আছে। একটা জায়গায় কোন ঘটনা ঘটলে সেটা ‘ইম্প্লিকেশন’ অবশ্যই আরেকটা জায়গায় থাকবে। এ ধরনের ঘটনা আমরা বাংলাদেশেই দেখছি। অনলাইন সেগমেন্টে একটা কোম্পানির কাজ এবং আয় যেরকম জাঁকজমকপূর্ণ - তার সাথে ভ্যাট জমার হিসেব মেলাতে গেলে জটিল সমস্যায় পড়েন ভ্যাট গোয়েন্দারা। তবে, এই জিনিসকে ‘ট্যাক্সেশন ডোমেইনে’র একটা নির্দিষ্ট কাজের জন্য নয় বরং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ‘ইন জেনারেল’ সব ধরনের কাজে লাগানো যেতে পারে। এছাড়া, নির্দিষ্ট কেসভিত্তিক আলাদা আলাদা সেক্টর নিয়ে কাজ করতে পারে নির্দিষ্টভাবে এই মডেল।

বাংলাদেশ এবং উৎসে আয়কর কর্তনের হিসেব

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে একটু পাশে রেখে একটা কথা বলি। এখনই কী সম্ভব? বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ডাটাহাব (সবার জন্য ডাটা এক্সচেঞ্জ) ডিজাইন করতে গিয়ে একটা জিনিস বুঝেছি, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রতিটা উৎসে সংযোগ থাকলে রিয়েল-টাইম অনলাইন ভেরিফিকেশন হতে পারতো প্রতিটা উৎসে। তাহলে ব্যক্তি/কোম্পানি পর্যায়ে প্রতিটা এন্ট্রি আলাদা করে 'চেক' করার প্রয়োজনীয়তা কমে যাবে একেবারেই। এটা সম্ভব এখনই। সবারই 'এপিআই' তৈরি হয়ে আছে সংযুক্ত হবার জন্য। এখন ক্লাউডের রাজত্ব। এতে ব্যক্তি অথবা কোম্পানিগুলোর আয়কর কর্তনের হিসেব পাওয়া যেতো ড্যাসবোর্ডে - যা সাহায্য করতে পারতো দেশের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের মানুষগুলোকে - পুরো বিষয়টা বুঝতে। কোন সেক্টরে বেশি আয়ের চাপ নিতে পারছে না, সেটার সিমুলেশন চালানো যাবে এখনই। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চাইলে এখনই এধরনের 'রিয়েল-টাইম অনলাইন ভেরিফিকেশন' শুরু করতে পারে। সেটা নিমিষেই কমিয়ে দেবে হাজারো জটিলতা। নীতিমালায় তাদের সেই ম্যান্ডেট আছে।

তবে, আমি যখন ডাটা দেখি তখন অবাক হই, একটা বিশাল সম্ভাবনার উপর বসে আসি আমরা।