কনটেন্টে যান

অ্যাডাপ্টিভ লার্নিং সিস্টেম - সিস্টেম ডিজাইন

'স্মার্ট স্প্যারো' একটা এডুকেশন টেক স্টার্টআপ যাদের অনেক ধারণা নিয়েছি এই অংশে। এটা অনেকটাই ইউনিভার্সিটি অফ নিউ সাউথ ওয়েলসের একটা 'স্পিনঅফ' (বিজনেস ভেঞ্চার) যাদের ‘অ্যাডাপটিভ ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের অনেক স্কুলে। প্ল্যাটফর্মটা একটা ইন্টেলিজেন্ট টিউটোরিং সিস্টেম যেটা মডেল ট্রেসিং দিয়ে কনস্ট্রেইন্ট বেসড মডেলিং যুক্ত করে। 'বিল এবং মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন' এই প্রযুক্তির ব্যাপারে তাদের কয়েকটা পেপারে বলেছেন। সামনের পৃথিবীর ই-লার্নিং এর প্রসারের ধারনায় কিছুদিন আগে স্মার্টঅ্যারোকে কিনে নিয়েছে পিয়ারসন এডুকেশন।

‘রিয়েল টাইম’ কমিউনিকেশন: শিক্ষক - শিক্ষার্থী

চলুন আমরা একটা জিনিস ভিজুয়ালাইজ করি। একজন শিক্ষার্থীকে একজন শিক্ষক পড়াচ্ছেন একটা ঝামেলাপূর্ণ কনসেপ্ট নিয়ে। আবারো বলছি, এখানে দুটো কম্পোনেন্ট; একজন শিক্ষা এবং একজন শিক্ষক। পুরো সময় আমাদের শিক্ষক উনার শেখানোর ডেলিভারি স্টাইল পরিবর্তন করতেই থাকবেন প্রতিমুহূর্তে যতক্ষণ পর্যন্ত না আমাদের শিক্ষার্থী শিখছেন। আমরা কিভাবে বুঝবো শিক্ষার্থী বুঝতে পারছেন? এব্যাপারে কিছু কিছু সময় শিক্ষার্থী মুখে রেসপন্স দেবেন। অথবা কিছু সময় শিক্ষার্থীর দৈহিক এবং তার মুখভঙ্গি বুঝে উনার শেখানোর পদ্ধতি পাল্টাবেন। পুরো ব্যাপারটি একটা ‘রিয়েল টাইম’ কমিউনিকেশন - যেখানে শিক্ষার্থী ঠিকমতো বুঝতে পারছেন কি পাচ্ছেন না সেটার ওপর ভিত্তি করে শিক্ষক একেক সময় একেক ধরনের ডেলিভারি মেকানিজম ব্যবহার করছেন শিক্ষার্থীর বোঝানো নিশ্চিত করতে।

কিছু কিছু সময় উনি শেখানো বন্ধ রেখে শিক্ষার্থীর কাছ থেকে নতুন প্রশ্ন নিয়ে সেটাকে ‘কন্টেক্সটুয়ালি’ এবং ‘কন্টেক্সট’ এর বাহিরে গিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করছেন, পাশাপাশি নতুন রেফারেন্স নিয়ে আসছেন যাতে শিক্ষার্থী তার জানা রেফারেন্স ধরে ব্যাপারটাকে কানেক্ট করতে পারেন। শিক্ষার্থীকে ওই বিষয়ের সাথে কানেক্ট করা প্রথম লক্ষ্য। শিক্ষার্থী কোন ব্যাপারে উৎসাহ বা ‘বোরিং’ ফিল করছেন সেটাকেও লক্ষ্য রাখছেন আমাদের শিক্ষক। যখন একজন শিক্ষার্থীর সাথে একজন শিক্ষক (১:১ অনুপাত) থাকেন তখন পুরো ব্যাপারটাই আমাদের হাতের নাগালে থাকে।

একজন শিক্ষার্থীর সাথে একজন শিক্ষক (১:১ অনুপাত) থেকে হাজারো শিক্ষার্থী

কী হচ্ছে পৃথিবীতে?

The e-learning industry is on the rise. According to Orbis Research, by 2022, this market will reach 275 billion dollars, it is almost doubled as, in 2015, the market was estimated 165 billion dollars. Forbes predicts that its growth will reach 325 billion dollars by 2025. At the same time, according to the MarketsandMarkets study, the AI market will grow to $190 billion, by 2025.

-- AI-powered LMS (Learning Management System), Softengi

আমাদের উপরের উদাহরণে শিক্ষার্থীর বিভিন্ন ইনপুট, সেটা মৌখিকভাবে হোক অথবা তার ভঙ্গিমা থেকে হোক - তার উপর ভিত্তি করে আমাদের শিক্ষক পাল্টাচ্ছেন তার ‘অ্যাডাপটিভ’ শেখানোর অভিজ্ঞতা। এর অর্থ হচ্ছে উনি ‘অ্যাডাপটিভ’ তার ডেলিভারির ক্ষেত্রে। দেখা গেছে একজন বা দুইজন শিক্ষার্থীকে যে কোন একটা সময়ে একজন শিক্ষকই পারেন ঠিকমতো লার্নিং এক্সপেরিয়েন্স তাদেরকে পৌছে দিতে। যতোবেশি শিক্ষার্থী বাড়বে ততই কম একজন শিক্ষক তার শেখানোর অভিজ্ঞতাকে প্রতিটা শিক্ষার্থীকে দিতে পারবেন। এবং সেকারণেই এসেছে প্রযুক্তি। এই ‘স্কেলের’ বিষয়টি প্রযুক্তি ছাড়া এটা সম্ভব নয়।

এই জিনিসগুলো করতে আমাদের প্রয়োজনীয় ‘রুল-সেট’ অথবা ‘অ্যালগরিদম’ যেটাই ব্যবহার করি না কেন প্রতিটা শিক্ষার্থীর কনটেন্ট তার জন্য স্পেসিফাইড’ যখন একজন শিক্ষক একজন শিক্ষার্থীকে পড়ায়। যখন এটা হাজারো শিক্ষার্থীর ব্যাপারে ‘রেপ্লিকেট’ করবো তখন চলে আসবে ‘প্রোফাইলিং’ - প্রতিটা শিক্ষার্থীদের জন্য।

অ্যাডাপটিভ লার্নিং সিস্টেম ডিজাইন

আজকে অ্যাডাপটিভ লার্নিং প্রযুক্তি বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঠিক রেখে তার জন্য যথাযোগ্য সাপোর্ট মেকানিজম তৈরি করছে যাতে আমাদের ‘রকস্টার’ শিক্ষকগণ প্রতিটা শিক্ষার্থীদের আলাদা করে অসাধারণ শেখার এক্সপেরিয়েন্স দিতে পারেন। এখানে শিক্ষকদের রোল একজন ‘সিস্টেম ডিজাইনার’ হিসেবে দেখছি আমি। ডিজাইনারের তৈরি সিস্টেমের অভিজ্ঞতাটা হবে একজন শিক্ষক থেকে একজন শিক্ষার্থীর জন্য। এ কারনেই এই জিনিস ‘স্কেল’ করা যাবে হাজারো শিক্ষার্থীদের উপরে।

অ্যাডাপ্টিভিটি ফ্যাক্টরগুলো কিভাবে ডিজাইন করতে পারে?

সিস্টেম 'অ্যাডাপ্টিভিটি' ব্যাপারটা নিয়ে সামনে আলাপ করবো। এমুহুর্তে শেখানোর ধরনটাকে আমরা দু'ভাবে ‘অ্যাডাপ্ট’ করতে পারি। ১. রুলসেট দিয়ে একটা নির্দিষ্ট ডিজাইনকে (যেটা শিক্ষক করবেন) অ্যাডাপ্ট করা, ২. অ্যালগরিদম দিয়ে শিক্ষার্থীর গতি এবং চাহিদার সাথে অ্যাডাপ্ট করা। দুটোই চালু সিস্টেম, তবে আমরা আস্তে আস্তে ‘অ্যালগরিদম’ দিয়ে ধারণা নিয়ে বেশি জোর দেব।

একজন শিক্ষক যখন একটা ‘এক্সপার্ট’ সিস্টেমকে শেখানোর প্রয়োজনীয় সিকোয়েন্স তৈরি করবেন তখন সেটার ডিজাইনটা এভাবে আসবে যাতে শিক্ষার্থীরা ওই বিষয়ে পুরো নিতে পারে। আমরা চাইছি জ্ঞানের গ্যাপ যাতে কম থাকে। ডিজাইনার (যিনি আমাদের শিক্ষক), ওই বিষয়ের বিভিন্ন লেসনগুলোকে এমনভাবে সিকোয়েন্সে এগিয়ে দেবেন যা পুরোপুরি নির্ভর করবে শিক্ষার্থীদের ফিডব্যাক এবং সামনে কোন কোন কনটেন্ট তারা দেখলে শেখাটা সম্পুর্ন হয়। এর মধ্যেই হতে থাকবে বিভিন্ন ‘অ্যাডাপটেশন’ যা আসবে কিছু দরকারী ফ্যাক্টরের উপর ভিত্তি করে।

জীবনের জন্য শিক্ষা

If You are planning for a year, sow rice; if you are planning for a decade, plant trees; if you are planning for a lifetime, educate people.

-– Chinese Proverb

রুলসেট দিয়ে সিস্টেম ডিজাইন

এই এক্সপার্ট মডেল সিস্টেমে কনটেন্ট নিজে থেকেই অ্যাডাপ্ট করবে বিভিন্ন ‘ইউনিক’ মানে নতুন নতুন ঘটনার উপর ভিত্তি করে, কিছুটা 'এটা হলে ওটা হবে' রুল সেটের ভিত্তিতে। আর এ কারণেই এই জিনিসটাকে ব্যবহার করা হয় শিক্ষার্থীদের ‘রিয়েল টাইম’ কি কনটেন্ট লাগতে পারে; এর পাশাপাশি যারা ভালো করবে তাদের জন্য ‘অ্যাডভান্সড’ মানে আরো প্রগতিশীল কনটেন্ট কিভাবে আসবে সেটার একটা পাইপলাইন ডিজাইন করা থাকবে আগে থেকে। এদিকে শিক্ষার্থীর গতির উপর নির্ভর করে পরবর্তী কনটেন্টগুলো কত গতিতে আসবে সেটাও নির্ধারণ করে দেবে এই সিস্টেম। তবে সিস্টেমকে শেখার সময় দিতে হবে শুরুতে।

এখানে একজন শিক্ষার্থীর কোন কোন কনটেন্ট তার জন্য দরকারি হবে, কোনটা দরকারি নয় এবং কোন কোন কনটেন্টগুলো তার জীবনে (কাজে লাগবে সে গুলোকে এই শিক্ষার অভিজ্ঞতার মধ্যে ঢুকিয়ে দিতে পারেন একজন শিক্ষক।

অ্যালগরিদম দিয়ে সিস্টেম ডিজাইন

এখন আসছে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা মানে অ্যালগরিদম এর সাহায্যে ‘অ্যাডাপ্ট’ করার ধারণা। ব্যাপারটা অনেক ইন্টেলিজেন্ট, এবং এটাই থাকবে টিকে শেষ পর্যন্ত। এই মেথডে বেশ কয়েকটা অ্যালগরিদম তার কনটেন্ট সাজানোর জন্য বেশ কয়েকটা প্রশ্নের উপর এর ডিজাইন নির্ভর করে থাকে। এরমধ্যে, যেমন ১. আমাদের শিক্ষার্থী কতটুকু জানেন, এবং ২. পরের লেসনগুলোতে আমাদের শিক্ষার্থী কি ধরনের শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা আশা করছেন? এ ধরনের কিছু প্রশ্ন নিয়ে তাদের ইন্টার্নাল অ্যাসেসমেন্ট বানানোর পর এর ডিজাইন প্রসেস শুরু হয়। এখন বলতে করতে পারেন, শুরুতেই প্রশ্ন কেন? ওই ধরনের কিছু প্রশ্নের উত্তরে অ্যালগরিদমগুলো ওই সময়ের জন্য কোন কনটেন্টগুলো প্রাসঙ্গিক, সে গুলোকে সামনে এগিয়ে দিবে শিক্ষার্থীর কাছে।

যেহেতু আমরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কথা বলছি সে কারণে এখানে এই নলেজ ট্রাকিং এর জন্য কয়েকটা অ্যালগরিদমের কথা বলা যেতে পারে। এরমধ্যে ‘বেইজিয়ান নলেজ ট্রাকিং’ যেটা আমাদের শেখার অর্থাৎ শিক্ষার্থীর লার্নিং রেইট বোঝার চেষ্টা করে। অর্থাৎ কতোটুকু আমাদের শিক্ষার্থী নিতে পারবে? আরেকটা ফ্রেমওয়ার্ক হচ্ছে ‘আইটেম রেসপন্স থিউরি’ যেটা সাইকোমেট্রিক ধারণা থেকে মডেলের সম্পর্ক বের করে প্রতিটি শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে, যাতে ব্যাপারটা টিকসই হয়।