কনটেন্টে যান

নীতিমালা তৈরিতে কেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা?

একটা পত্রিকার প্রতিবেদন - নীতিমালা ঠিকমতো মানা না নিয়ে

ঢাকায় দুই সিটি করপোরেশন ছাড়াও বিভিন্ন সংস্থা সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি করে। সড়ক খনন ও পরে মেরামত কার্যক্রমে সমন্বয় ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। সিটি করপোরেশন এলাকায় সড়ক খোঁড়াখুঁড়ির ক্ষেত্রে এসব সংস্থার মধ্যে সমন্বয় ঘটাতেই ২০১৯ সালের ‘ঢাকা মহানগরীর সড়ক খনন নীতিমালা’ প্রণীত হয়। দুই সিটি করপোরেশন ছাড়াও ঢাকা ওয়াসা, তিতাস গ্যাস, ডিপিডিসি, ডেসকো, বিটিসিএলের মতামত ও সুপারিশ নিয়ে এটি চূড়ান্ত করা হয়েছিল।

-- ০২ জানুয়ারি ২০২১, প্রথম আলো

যেকোন নীতিমালা তৈরি করা হয় একটা জনগোষ্ঠীর সামগ্রিক বিষয়গুলোর ভালোমন্দ চিন্তা করে। সেটা তৈরি, তার ঠিকমতো প্রয়োগ এবং কেন ভঙ্গ করছে সেটার পেছনে একটা বড় কারণ হচ্ছে - ডেটার সাহায্য না নেয়া। অর্থাৎ সবার ইনপুট নেয়া হলেও সেখানে অদৃশ্য কিছু সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। যেটা সমাধান করতে পারে ডেটা ড্রিভেন 'ডিসিশন সাপোর্ট সিস্টেম'।

আচ্ছা, নীতিমালা কি? আর নীতিমালার সাথে সিদ্ধান্তের সম্পর্ক কি? কেনই বা একটা নীতিমালা ঠিকমতো প্রয়োগ করতে পারছি না? শেষমেষ - কেনই বা সিদ্ধান্তগুলো আমরা ছেড়ে দিতে যাচ্ছি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উপর? মানুষের দ্বারা, মানুষের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ, এর প্রতিকার কি?

শুরুতে নীতিমালা। উইকিপিডিয়া খটমটে ভাষায় কি বলছে একটু দেখে আসি।

নীতিমালার সংজ্ঞা

নীতিমালা হচ্ছে সিদ্ধান্ত এবং যৌক্তিক ফলাফল লাভের একটি স্বাভাবিক ব্যবস্থা। মূলত এটি একটি বিবৃতি যাকে একটি পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। সাধারণত প্রতিষ্ঠানের শাসনকারী কর্তৃপক্ষ দ্বারা নীতি গ্রহণ করা হয়। কোন বিষয় বা উদ্দেশ্য উভয়ক্ষেত্রেই নীতিমালা থাকতে পারে। বিষয়ভিত্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার নীতিগুলি সাধারণত শীর্ষ বিষয়ভিত্তিক ব্যবস্থাপনায় করা হয় যা অবশ্যই অনেকগুলি কারণের আপেক্ষিক গুণাবলির উপর ভিত্তি করে হতে হবে। …..

….. সরকার, বেসরকারি সংগঠন বা গোষ্ঠী এমনকি ব্যক্তিও এই ধারণাটির ব্যবহার করতে পারে। রাষ্ট্রপতির নির্বাহী আদেশ, কর্পোরেটের গোপন নীতি এবং সংসদীয় আদেশের নীতি এগুলো হল নীতিমালার উদারহণ। নীতিমালা আইনভেদে ভিন্ন হয়। আইন বাধ্য বা বিরত করতে পারে (যেমন কর আদায় সংক্রান্ত আইন) এবং নীতিমালা হল বাস্তবায়নের পদ্ধতি যার ফলে মাধ্যমে সর্বোচ্চ ফলাফল লাভ করা যায়।

সহজ ভাষায় বললে নীতিমালা এমন একটা পদ্ধতি যার মাধ্যমে একটা ব্যাপারে খুব তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। যেহেতু নিয়ম কেউ মানতে চান না, সেকারণে সবারই ইনপুট নিয়ে বানানো হয় এধরনের নীতিমালা যা সবাই মানতে পারেন। যেমন, অফিসের ‘পাসওয়ার্ড নীতিমালা’। যেহেতু এই ধরণের নীতিমালা কেউ পছন্দ করেন না - সে কারণে সংস্থার নীতিনির্ধারণীতে যারা আছেন তারা এমন একটা নীতিমালা বানিয়ে দেন যাতে সবাই একটা ‘ন্যূনতম’ স্ট্যান্ডার্ড বজায় রাখেন।

সকলের জন্য নীতিমালা, সচ্ছতার ভিত্তিতে

শুরুতে পাসওয়ার্ড নীতিমালা হয়তোবা আরো কঠিন করে লেখা যেত, তবে সবার সক্ষমতার উপর নির্ভর করে এবং যেটা প্রতিদিন করা সম্ভব সে ধরনের একটা নীতিমালা তৈরি করা হয় পুরো অফিস জুড়ে। নীতিমালার একটা বড় ব্যাপার হচ্ছে এতে বৈষম্যমূলক আচরণের ব্যাপারটা খুব ভেতর থেকে দেখা হয়। একটা নীতিমালা পড়ে যাতে কোন গোষ্ঠী বলতে না পারেন যেখানে তাদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে। তবে যে কোনো নীতিমালা পরিবর্তন হতে থাকে ব্যবহারকারীদের সুবিধার কথা চিন্তা করে। সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন হয় নীতিমালার বিভিন্ন মানদণ্ড।

যে কোনো নীতিমালা এমনভাবে করা হয় যাতে এখান থেকে সবাই একই ধরনের সুবিধা পায় স্বচ্ছতার ভিত্তিতে। এ পদ্ধতিতে এমনভাবে তৈরি করা হয় যাতে সবাই সুফল পায়। যেমন ট্রেড লাইসেন্স পাবার নীতিমালা। এই পদ্ধতিতে একজন সাধারণ মানুষ কত কম ঝামেলা করে একটা ট্রেড লাইসেন্স পেতে পারে সেটার কিছু পদ্ধতি তৈরি করে দিয়েছে সরকারি প্রশাসন। এর পাশাপাশি, এই নীতিমালাগুলো এমনভাবে তৈরি করা যাতে রাষ্ট্রের সার্বিক নীতিমালার সাথে যায়, যেমন, উদ্যোক্তা তৈরি করা। এই নীতিমালাগুলো সাধারণত: সর্বজনস্বীকৃত পদ্ধতির মাধ্যমে হয়ে থাকে যাতে কোনো গোষ্ঠী বা ব্যক্তি এখানে বৈষম্যমূলক আচরণ না পান।

ব্যবহারিক এবং প্রশাসনিক নীতিমালা

উদাহরণ হিসেবে, আরেকটা নীতিমালা নিয়ে কথা বলা যেতে পারে, যেমন পাসপোর্ট পাবার আবেদনের নীতিমালা। এখানে যেভাবে একজন সাধারণ জনগণ কিভাবে পাসপোর্ট তৈরি করার জন্য আবেদন করবেন তার নীতিমালার পাশাপাশি একজন সাধারণ নাগরিক কি ধরনের ‘ক্রাইটেরিয়া’ পূর্ণ করলে উনি পাসপোর্ট পাবেন সে ধরনের আরেকটা নীতিমালা থাকছে পাসপোর্ট অফিসের জন্য। এই নীতিমালাকে খুব সহজে অটোমেট করা যায়, বর্তমান সব নির্ণায়ক এবং মানদণ্ড বজায় রেখে। আমরা এখানে দুটো নীতিমালার কথা বলছি যার মধ্যে প্রশাসনিক নীতিমালা যেই নির্ণায়ক এবং মানদণ্ডের মধ্য দিয়ে পাসপোর্ট দেওয়া হবে সেটাকে পুরোপুরি ছেড়ে দেওয়া যায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কাছে। এ ব্যাপারে নীতিনির্ধারকদের কিছু ভীতি কাজ করতে পারে যা পাইলট পর্যায়ে পর্যালোচনা করার স্কোপ থাকে।

আমরা যারা ব্যাপারটাকে সেভাবে বিশ্বাস করি না; তারা একটা ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করার আগে কিভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা একজন ক্রেডিট কার্ড গ্রহীতার ক্রেডিট স্কোর, তাকে কী ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করা যায় কিনা, ভবিষ্যতে সে টাকাটা ফেরত দিতে পারবে কিনা, এই ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কোন ধরনের প্রতারণামূলক কার্যক্রম হবে কিনা এই কাজগুলো হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

'ডাটা ড্রিভেন' সরকারের ম্যান্ডেট

সেভাবে এখন প্রশাসন যেহেতু ‘ডাটা ড্রিভেন’ সরকার হিসেবে তার নিজস্ব সার্ভিস ডেলিভারিগুলোকে আরো সহজতর করে নিয়ে আসছেন, সেখানে এ ধরনের পাসপোর্ট/অনাপত্তি ছাড়পত্র/ ছোট আকারের লাইসেন্স ইস্যু করার একটা বড় অংশ পুরোপুরি কিছু নীতিমালার ধারণায় কয়েকটা লজিক দিয়ে অটোমেট করা যায়। যেখানে মানুষের কোন স্পর্শ থাকবে না। সবশেষে পাসপোর্ট ইস্যু হবার আগে হয়তোবা মানুষকে সেই লুপে আনা যেতে পারে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের সেই ভয়টা না কাটছে।

আমরা যেটা দেখেছি অ্যালগরিদম, বিগ ডাটা অথবা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আমরা যাই বলি না কেন সবকিছুই সাহায্য করছে মানুষকে ভালোভাবে সিদ্ধান্ত নেবার জন্য। এখানে প্রাইভেট সেক্টর যেভাবে তাদের অনেক কাজ ছেড়ে দিয়েছে কিছু স্পেসিফিক অ্যালগরিদম এবং বিগ ডাটা অ্যানালাইটিকসের উপরে যাতে একটা অ্যালগরিদম সিদ্ধান্ত নিতে পারে মানুষের সাহায্য ছাড়াই। এর পাশাপাশি অ্যালগরিদম কেন এবং কিভাবে কোন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সেটা স্বচ্ছতার ভিত্তিতে যাচ্ছে সিস্টেমে। এর মধ্যে কোন ধরনের "ওভাররাইডিং" ফ্যাক্টর অর্থাৎ সেই শেষ সিদ্ধান্তকে পাল্টাতে পারে মানুষ। তাহলে ভয় কোথায়?

মানুষের ক্ষমতা ছেড়ে দেয়া প্রয়োজন যন্ত্রের কাছে; মানুষের সাহায্যে

স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত

AI can be used to enhance the accuracy and efficiency of decision-making and to improve lives through new apps and services. It can be used to solve some of the thorny policy problems of climate change, infrastructure and healthcare. It is no surprise that governments are therefore looking at ways to build AI expertise and understanding, both within the public sector but also within the wider community.

-- AI is here. This is how it can benefit everyone, The World Economic Forum, 01 Sep 2020

সেই একই জিনিস আমরা চাচ্ছি সরকারে - যেখানে প্রতিটি স্তরে মানুষের ক্ষমতা দেওয়া আছে বর্তমানে। অনেক দেশেই এই ব্যাপারটা এখনও ছেড়ে দেওয়া আছে পুরোপুরি মানুষের হাতে। অর্থাৎ একটা ছাড়পত্র অথবা একটা পারমিট দেবার জন্য কাকে কোন পারমিট দেওয়া হবে অথবা কাকে দেওয়া হবেনা সেই ধরনের সিদ্ধান্ত পুরোপুরি ছেড়ে দেওয়া আছে মানুষের হাতে। সমস্যা শুরু হয় যখন একজন বা কিছু মানুষের মানুষের বৈষম্যমূলক আচরণ, টাকা পয়সার লেনদেন এবং প্রসেসের ভেতরে স্বচ্ছতার অভাব হয়। সেখানে মানুষের ‘বায়াস’ অথবা একজন মানুষের সাথে আরেকজন মানুষের সম্পর্কের কথা চলে আসে। যার সাথে সম্পর্ক ভালো তার পারমিট আগে, আর যার সাথে সম্পর্ক নেই তার পারমিট পড়ে অথবা সেটা ঘুরতে থাকে।

আমাদের মতো দেশগুলোতে মানুষ ভয় পায় যখন আমরা ধারণা করি মানুষের হাত থেকে সব ক্ষমতা চলে যাচ্ছে যন্ত্রের কাছে। আসলে আমরা যেটা বুঝতে পারছি না; যে কাজগুলো যন্ত্র করছে তা মানুষের সাহায্যের জন্য করছে যাতে শেষ সিদ্ধান্তটা মানুষ নিতে পারে। এছাড়া যেসব ছাড়পত্র মধ্যে কম টাকার লেনদেন অথবা সোজা ধরনের ছাড়পত্র গ্রহণ পুরোপুরি ‘অটোমেট’ করা যেতে পারে শুরুতে। এতে মানুষের ভয় কমতে থাকবে আস্তে আস্তে। বিশেষ করে যন্ত্রের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে, যখন ছোট ছোট সিদ্ধান্ত ছেড়ে দেওয়া হবে যন্ত্রের উপরে। এ সিদ্ধান্তগুলো তৈরি করে দেবো আমরা মানুষ। যেমন, বিমানের 'অটো-পাইলট' এখন অনেকটাই নির্ভরযোগ্যতা পেয়েছে সময়ের সাথে সাথে।

ছোট ছোট সিদ্ধান্ত ছেড়ে দেয়া যায় যন্ত্রের কাছে

মানুষের দরকার নেই সব জায়গায়

What if, instead of thinking of automation as the removal of human involvement from a task, we imagined it as the selective inclusion of human participation? The result would be a process that harnesses the efficiency of intelligent automation while remaining amenable to human feedback, all while retaining a greater sense of meaning.

-- Humans in the Loop: The Design of Interactive AI Systems, GE WANG, October, 2019

হেলথকেয়ার সেক্টরে এখন প্রচুর ডায়াগনোস্টিক টুল এসেছে যেগুলোর পেছনে কাজ করছে মেশিন লার্নিং এবং বিগ ডাটা অ্যানালিটিকস। আমরা সেসব রিপোর্ট মেনে নিচ্ছি কোন ধরনের প্রশ্ন ছাড়াই। অথচ এ ধরনের রিপোর্ট যা সরাসরি ইম্প্যাক্ট করছে মানুষের শারীরিক অবস্থার উপর। সেখানে আমরা ছোট ছোট ‘ছাড়পত্র’, ক্লিয়ারেন্স, অথবা অনাপত্তিপত্র অথবা ‘অল্প টাকার লাইসেন্স’ ছেড়ে দিতে চাচ্ছি না এই অটোমেশনের উপরে। মানুষকে এ ধরনের ছোট ছোট সিদ্ধান্ত থেকে বের করে নিয়ে আসলে যিনি সার্ভিসটির গ্রহীতা এবং যিনি সার্ভিস দিতে যাচ্ছেন সেই দুটো মানুষের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন হবার সম্ভাবনা কম থাকবে। এগুলো চলবে ‘রুল বেইজড’ সিস্টেমের উপর। যেমনটা চলছে ব্রিজের টোল কালেকশনের কাজ। মনুষ্যবিহীন ভাবে।

দরকার ডাটা শেয়ারিং, সংস্থাগুলোর ভেতরে

অর্থাৎ ট্রেড লাইসেন্স পেতে যদি পনেরোটা ‘ছাড়পত্র’ অথবা কাগজের ফটোকপি জমা দিতে হয়, সেগুলো আসলে দরকার নেই কারণ সরকারি সংস্থাগুলো একে অপরের সাথে ‘কানেক্টেড’ থাকলে ট্রেড লাইসেন্স প্রদানকারী সংস্থা বাকি সম্পর্কিত সংস্থাগুলো থেকে ‘ইলেকট্রনিক কোয়েরি’ করে মিলিয়ে নেবে সব তথ্য। সবশেষে, মানুষ যদি শেষ সিদ্ধান্ত দিতে চান সেটাও করা সম্ভব একদম শেষ পর্যায়ে। তবে এই জিনিসটাকেও সরিয়ে ফেলতে হবে মানুষের প্রতি মানুষের বৈষম্যমূলক আচরণ এবং স্বচ্ছতা আনার জন্য। আমি এখানে মানুষের সক্ষমতার নিয়ে আলাপ করছি না বরং মানুষের ক্ষমতার কিছু অপব্যবহারের অংশগুলোকে কমিয়ে আনার একটা পদ্ধতি তৈরি করার কথা বলছি।

মানুষকে বের করে আনতে হবে এই 'অপারেশনাল' লুপ থেকে, মানুষের সাহায্যে

সমস্যা হচ্ছে মানুষকে প্রতিটা জায়গায় বিশেষ করে সিদ্ধান্তের প্রতিটা লুপে আনলে সবকিছুই দেরি হতে পারে বলে এই অটোমেশনের ধারণা। পাসপোর্ট একটা নাগরিক অধিকার, তবে তার জন্য যত ধরনের নিরাপত্তা ছাড়পত্র বা অন্যান্য তথ্যের দরকার হয়, সেগুলো সব সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কাছে আছে। আগেই বলেছি, যেহেতু সরকার ডাটা ড্রিভেন, এতে প্রতিটা সংস্থার মধ্যে ডাটা আদান প্রদান এ ধরনের ডিজিটাল প্রশাসনের পূর্ব শর্ত। তবে এখানে বেশ কিছু সমস্যা আছে। সরকার অর্থাৎ যে কোন দেশের প্রথাগত সরকারের স্ট্রাকচার সাধারণত ডাটা বান্ধব নয়। সেই পুরনো স্ট্রাকচার থেকে নতুন স্ট্রাকচারে আসতে সময় লাগছে বেশ কিছুটা। তবে এ ব্যাপারে সাহায্য করছে নতুন প্রজন্ম, তাদের ডিজিটাল লিটারেসি অর্থাৎ সক্ষমতা দিয়ে।

সরকারগুলোর নতুন কার্যপদ্ধতি: নীতিমালার স্টান্ডার্ডগুলোর যোগসুত্র

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং প্রচুর ডাটা নিয়ে কাজ করতে গিয়ে একটা জিনিস বোঝা গেছে: বিশ্বজুড়ে সরকারগুলোর উপর গভীর ইম্প্যাক্ট ফেলছে এর নতুন কার্যপদ্ধতি। এতবছর সরকারগুলো যেভাবে নিজেদেরকে চালাতেন সেই ফ্রেমওয়ার্ক থেকে বের হয়ে নতুন ধারণায় নিজেদেরকে সন্নিবেশন করানো একটা বিশাল চ্যালেঞ্জ। সুতরাং, এই বিষয়টির ব্যাপারে সরকারের যারা গুরুত্বপূর্ণ নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে কাজ করছেন তাঁরা এবং ‘স্কলার’, যারা ডাটা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করছেন তাদের একটা জোগসূত্র হওয়া প্রয়োজন। এই বিষয়টির বিশ্লেষণগুলোকে ঠিকমতো উপস্থাপনা করা গেলে এই নতুন পদ্ধতি জনগণের সার্ভিস ডেলিভারিতে ভালো ‘ইম্প্যাক্ট’ ফেলবে। প্রশাসনকে তখন জনমুখী বলা যেতে পারে।

এর পাশাপাশি যারা প্র্যাকটিশনার অর্থাৎ সরকারের ভেতর এই তত্ত্বকে অনুসরণ করছেন সে ধরনের অনুশীলনকারীদের একটা স্ট্যান্ডার্ড তৈরি করা উচিত যাতে বর্তমান অবস্থা থেকে নতুন অবস্থায় উত্তরণের জন্য যা যা নীতিমালায় পরিবর্তন করা প্রয়োজন সেটার বিশ্লেষণ আসবে সামনে। ডেটার ব্যবহারের ধারণা পাবলিক সেক্টরে নতুন নয়, তবে সেটাকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাথে প্রয়োজনীয় অ্যাপ্লিকেশনগুলোর সম্ভাব্য এবং প্রকৃত ব্যবহার সরকারী খাতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের কোন কোন জায়গায় তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক বিবেচনার দিকগুলোকে প্রভাবিত করবে সেটা জানা জরুরি।

অনেক গল্প হলো, কিন্তু নীতিমালা তৈরি হয় কিভাবে? আর সেটাকে ডাটা দিয়ে তৈরি না হলে টেকসই হবে কী?