কনটেন্টে যান

মানবিক রাষ্ট্র থেকে কতো দুরে বাংলাদেশ?

দরকার মানব সক্ষমতা

The focus of this support has been on making the programs more pro-poor. This is being achieved by building and enhancing administrative systems to help identify the most vulnerable objectively, deliver benefits and services timely and efficiently, and strengthen citizen engagement. Investments in human capacity building and technology have been critical in this process.

-- World Bank April 29, 2019

সংবিধান, সামাজিক নিরাপত্তার (সোশ্যাল সিকিউরিটি) সংজ্ঞা

একটা দেশের বয়স যখন বাড়তে থাকে - তখন সেই দেশটা আস্তে আস্তে জনকল্যাণমুখী কাজে মনোযোগ দেয়। এক কথায় বলতে গেলে দেশটা তখন মানবিক রাষ্ট্রে পরিণত হবার জন্য যেটা দরকার সে ধরনের কৌশলপত্র তৈরি এবং সেটাকে বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে কাজ শুরু করে। এদিক থেকে সার্বজনীন ন্যূনতম আয়ের ধারণা অতোটা পুরানো নয়। সেটার একটা ভালো উদাহরন তৈরি হয়েছে এই অতিমারির সময়। সাম্প্রতিককালে, কাজের সিস্টেমের দক্ষতা এবং অটোমেশনের ফলে অনেক চাকরি প্রতিস্থাপন হবার সাথে সাথে কল্যাণধর্মী রাষ্ট্রে দরিদ্র জনসাধারণের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা প্রদান রাষ্ট্রের একটি আবশ্যকীয় কর্মসূচি। ১৯৭২ সালে যখন আমাদের সংবিধানের কার্যকারিতা শুরু হয়, তখনই ১৫–এর ঘ এ সামাজিক নিরাপত্তার (সোশ্যাল সিকিউরিটি) সংজ্ঞা দেওয়া হয়।

যে জিনিসটা দেখা গেছে, প্রতিটি দেশের সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলে, সে দেশের অবস্থায় সামাজিক নিরাপত্তার একটি সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধানে এর সংজ্ঞা হিসেবে ১৫ এ উল্লেখ আছে ‘রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব হইবে পরিকল্পিত অর্থনৈতিক বিকাশের মাধ্যমে উৎপাদনশক্তির ক্রমবৃদ্ধিসাধন এবং জনগণের জীবনযাত্রার বস্তুগত ও সংস্কৃতিগত মানের দৃঢ় উন্নতিসাধন’। সেই জনগণের জীবনযাত্রার উন্নতি সাধনে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে অনেক কাজ হলেও সেটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায় এখনকার একটা কৌশলপত্রে।

জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী অর্থাৎ ‘সোশ্যাল সেফটি নেট’

কৌশলপত্র

সামাজিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সমৃদ্ধ অতীত অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল প্রণয়ন করা হয়েছে। এ কৌশলের লক্ষ্য হলো বিদ্যমান সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচিগুলির পরিমার্জন ও সংশ্লেষণের মাধ্যমে এগুলিকে আরও নিখুঁত, দক্ষ ও কার্যকর করে তোলা এবং ব্যয়িত অর্থ থেকে সবার্ধিক সুবিধা অর্জন নিশ্চিত করা। এটি সনাতনী ধারণার পরিবর্তে একটি ব্যাপক ও বিস্তৃত পরিধির আধুনিক সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রচলন ঘটাবে। এই নতুন ব্যবস্থায় ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের বাংলাদেশের (যখন অতিদরিদ্র মানুষের সংখ্যা হবে ৫ শতাংশের চেয়ে কম) বাস্তবতায় কর্মসংস্থান নীতি ও সামাজিক বিমা ব্যবস্থাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

-- জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল: বাংলাদেশ

এ ধরনের কাজের শুরুতে প্রশাসন দেশের দারিদ্র্য এবং বৈষম্য কমিয়ে আনতে বেশকিছু পরিকল্পনা নিয়ে আসে। সে হিসেবে ২০১৫ সালের দিকে জনসাধারণের জীবনমানের উন্নয়নে একটা জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী অর্থাৎ ‘সোশ্যাল সেফটি নেট’ তৈরির কৌশলপত্র প্রণীত হয়েছে। এই কৌশলপত্রটি একটা বড় দিক হচ্ছে বিদ্যমান সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির ব্যাপারগুলোকে আরও দক্ষ এবং কার্যকর করে এর জন্য যে অর্থ ব্যয় হবে সেটার সর্বাধিক সুবিধা অর্জন নিশ্চিত করা।

আইনের মধ্যে যোগসুত্র

সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে সমাজের ঝুঁকিপূর্ণ, অবহেলিত জনগোষ্ঠীর সামাজিক সুরক্ষাকে আইনি বলয়ের আওতায় আনার জন্য এমুহুর্তে জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল, ভবঘুরে ও নিরাশ্রয় ব্যক্তি (পুনর্বাসন) আইন ২০১১, শিশু আইন ২০১৩, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩, পিতামাতার ভরণপোষণ আইন ২০১৩, নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট আইন ২০১৩ এবং বাংলাদেশ জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদ আইন ২০১৯ আইনগুলোর মধ্যে কতগুলো কার্যকর আর কতগুলো এই মুহূর্তে কার্যকরী করা যাচ্ছেনা সে গুলোকে বের করা যাবে পলিসি সাইকেল বলে একটা ফ্রেমওয়ার্ক দিয়ে। সেখানেও সাহায্য করতে পারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।

চলুন একটু ভেতরে যাই।

[এই অধ্যায়ের একটা বড় সাহায্য এসেছে নিচের লেখাগুলো থেকে]


  1. সামাজিক নিরাপত্তায় বিশেষ নজর: বরাদ্দ ৯৫ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা, ১২ জুন ২০২০ সমকাল 

  2. সামাজিক নিরাপত্তা-কৌশল ও আসন্ন বাজেট ২০১৬, প্রথম আলো, ২৭ এপ্রিল ২০১৬ 

  3. সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা প্রদান: ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহার, প্রথম আলো, ১৭ মে ২০২০ 

  4. সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে যত উদ্যোগ, বাংলা ট্রিবিউন, মার্চ ১৪, ২০১৯ 

  5. বাড়ছে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বলয়, দৈনিক ইত্তেফাক, ১০ জুন, ২০১৯