কনটেন্টে যান

কৃষক এবং অন্যান্য আত্মহত্যার যোগসূত্র

আগে থেকে দেখতে পাওয়া

Machine learning analysis of social media data represents a promising way to capture longitudinal environmental influences contributing to individual risk for suicidal thoughts and behaviors.

-- A machine learning approach predicts future risk to suicidal ideation from social media data, Nature

আমাদের এই দক্ষিণ এশিয়াতে প্রচুর কৃষক আত্মহত্যার খবর পাওয়া যায় প্রায়শঃ। যখন কোন ফসল মার যায় অতিবৃষ্টি অথবা অনাবৃষ্টির কারণে, তখন তারা বাধ্য হয় উঁচু হারে টাকা ধার নিতে। বিশেষ করে - তাদের সংসার আগলিয়ে রাখতে। কয়েকটা ফসল পরপর মার গেলে বন্ধকের কারণে প্রিয় ভিটেটাও হারাতে হয় একসময়। ব্যাপারগুলো অনেক সময় বাধ্য করে কৃষকদের আত্মহত্যায়। চড়া সুদের হাত থেকে বাঁচতে তারা হাত বাড়ায় কীটনাশকের দিকে। খুবই কষ্টকর বিষয় বটে। ২০১২ সালের পর থেকে হিসেবে মতে ১২ হাজারেরও বেশি কৃষক আত্মহত্যা করে শুধুমাত্র ভারতে। একটা হিসেবে দেখা গেছে - প্রতি ১ ডিগ্রী তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে একটা দেশের ৭০টি আত্মহত্যার সম্পর্ক আছে মাসে। কিছুই করার নেই কি আমাদের?

এখানে বিশাল একটা কাজে আসছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। আমাদের আশেপাশের দেশের কয়েকটা ‘স্টার্ট-আপ’ এলাকা ভিত্তিক স্যাটেলাইট ইমেজে খুঁজে পাচ্ছে কোন এলাকাতে কি রকম ফসল হয়েছে আগে - আর কী হবে সামনে। ছোট্ট ছোট্ট এলাকা ধরে। বুঝতেই পারছেন সেই ‘রিমোট সেন্সিং ডাটা’ থেকে অনেক ধারণা পাওয়া যাচ্ছে এখন। সেই ডাটা থেকে তারা যোগসূত্র পেয়েছে সেই আত্মহত্যাগুলোর। মানে, আমরা আগে থেকেই জানতে পারবো এই বাড়িতে কোন ফসল হয়নি গত কয়েক মাসে। ভেতরের ডাটা থেকে পাওয়া যাবে এলাকাভিত্তিক কোন কোন ফসলের দাম পড়তির দিকে? কোথায় কৃষক ফসল বিক্রিতে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে? কোথায় সুদের হার কতো এখন?

রিমোট সেন্সিং ডাটা থেকে ধারণা

এই ডাটা থেকে আমরা বিশাল একটা ধারণা করতে পারি সরকারি জরিপের আগেই। অনেক সময় ভুল অথবা সময়মতো জরিপ না হলে মানুষের ভেতরের খবর জানবে কে? কে আসলে কষ্টে আছে? কে একদম আত্মহত্যার মুখোমুখি পর্যায়ে আছে? ডাটা মিথ্যা বলে না। ফসল ধরে ধরে বলা যাচ্ছে কোথায় কি কি হচ্ছে? আসলেই তাই। ফসলের রং ধরে বলে দেয়া যায় আর কতোদিন পরে ফসল উঠবে? কোথায় মঙ্গা হবে সেটা বের করা যাবে আগে থেকে। আবহাওয়া, মাটির অবস্থা, ফসলের দামও প্রেডিক্ট করা যাচ্ছে এই মডেলে। আগামী বছর আমাদের চাল আমদানী করতে হবে নাকি সেটাও পাওয়া যাবে এখানে। ফাও, একটা ইউএন সংস্থা এই কাজ করছে অনেক বছর ধরে। কোথায় খাদ্য সাহায্য পাঠাতে হবে সেটার হিসেব পায় কিন্তু আগে থেকে।

মানসিক স্বাস্থ্য এবং বাংলাদেশে আত্মহত্যা রোধ করার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

সোশ্যাল মিডিয়ায় সাহায্য

In 2017, Facebook automated the detection of suicide content. This was an upgrade from a simplified platform that required users to manually upload screenshots (2011) or flag (2015) suicide-based content for urgent review. If suicide risk is detected, crisis response protocols are initiated, which may include providing supportive resources and crisis line information to users, or alerting local emergency responders.

-- Kleinman, 2015; Novet, 2018, The utility of artificial intelligence in suicide risk prediction and the management of suicidal behaviors

স্থানীয় গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে আত্মহত্যার হার প্রতি লাখে ৬ থেকে ১০ জন, যা উন্নত দেশের কাছাকাছি। গোটা বিশ্বে প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একজন আত্মহত্যা করছে। বাংলাদেশেও এই সংখ্যা নেহাত কম নয়। বছরে প্রতি লাখে আট থেকে ১০ জন আত্মহত্যা করছে। মনোরোগ চিকিৎসকেরা বলছেন, মানসিক রোগ নিয়ে সমাজে যে কুসংস্কার রয়েছে, সেটি রোধ করা না গেলে আত্মহত্যার মতো ঘটনা এড়ানো যাবে না।

বেশ লম্বা সময় ধরে সোশ্যাল মিডিয়াতে এই আত্মহত্যার ব্যাপারে বেশকিছু ঘটনা দেখেছি। দেশে বিদেশে এবং অনেক ধরনের ফোরামে এই ব্যাপারগুলো নিয়ে কিছু প্যাটার্ন বোঝা যায়। ঘটনাক্রমে, যিনি আত্মহত্যা করেছেন - তিনি অনেক আগে থেকেই তার কিছু ‘স্পেসিফিক’ প্যাটার্ন রেখে যাচ্ছেন যা ‘ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং’ দিয়ে ভালোভাবে মনিটর করলে এ ধরনের আত্মহত্যার ঘটনা ঠেকানো সম্ভব। এর পাশাপাশি, জরুরি কল সেন্টারগুলোর কল ঠিকভাবে মনিটর করলে এধরনের সংখ্যা আরও পাওয়া সম্ভব। এ ব্যাপারে আশেপাশের মানুষ সহ অনেকেই সাহায্য করতে পারেন তাদের ইনপুট দিয়ে। সেই ইনপুটগুলো সবসময় থাকবে ক্রাইসিস-সেন্টারগুলোতে - যা থেকে ভবিষ্যতের ঘটনাগুলোকে প্রেডিক্ট করা যাবে।

ডাটা সংগ্রহে আইনগত বাধ্যবাধকতা

আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি - একজন মানুষ কিভাবে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে, বিশেষ করে উনার টাচস্ক্রিন ব্যবহার করার প্যাটার্ন দেখে তার মানসিক অবস্থা বোঝা যায়। ভবিষ্যতে (আইনগত বাধ্যবাধকতা যদি থাকে) একজন মানুষের মানসিক অবস্থা ভয়ংকরভাবে খারাপ হবার আগেই মোবাইল অপারেটরের মাধ্যমে প্রশাসন জানতে পারবে। সামনে বিশ্বের সবারই মানসিক-স্বাস্থ্য ঠিক রাখা একটা বড় সমস্যা। এ ধরনের প্রযুক্তিগত সুবিধা এখনই সম্ভব - তবে এর জন্য প্রয়োজনীয় আইনি কাঠামো লাগবে।